দেখিয়া শুনিয়া লীলার উড়িল পরাণ।
নিদয় হইয়া পিতা হইলা পাষাণ॥
বাথান হইতে সঙ্গে সুরভি লইয়া।
যথাকালে কক্ষধর আসিল ফিরিয়া॥
সিনান করিয়া কঙ্ক ঘরেতে যাইয়া।
দেখে লীলা ভাত লইয়া কান্দিছে বসিয়া॥
কঙ্ক বলে “লীলা দেবী কান্দ কি কারণ।
গৃহেতে ঘটিল কিবা অঘট-ঘটন॥
গোষ্ঠ হইতে ফিরি পথে দেখি অমঙ্গল।
সুরভি মুখেতে নাহি লইল তৃণ-জল॥
আর দিন আমি যবে গোষ্ঠ হতে আসি।
জিজ্ঞাসেন পিতা কত নিকটেতে আসি॥
আজি কিবা অপরাধ করিনু চরণে।
জিজ্ঞাশিয়া উত্তর না পাই তে কারণে॥”
পাষাণের মূর্ত্তি লীলা দাণ্ডায় অচল।
দুই চক্ষু বহি তার ঝড়ে অশ্রু-জল॥
কথা নাহি সরে কঙ্কের হৃদয় বিদরে॥
আর বার বলে কঙ্ক “দেবী, তোমারে সুধাই।
তোমারে কান্দিতে আমি কভু দেখি নাই॥
আজি কেন বসুমতী কান্দিয়া ভাসাও।
কথা যদি নাহি বল মোর মাথা খাও॥
জানিত কি অজানিত অথবা স্বপনে।
করিয়াছি অপরাধ নাহি আইসে মনে॥”
বহুক্ষণ পরে লীলা অতীব যতনে[১]।
কান্দিয়া কান্দিয়া কণ্ঠে কহিল গোপনে॥
“আমার মিনতি রাখ শুন কঙ্কধর।
পলাইয়া যাও গো তুমি ভিন্ন দেশান্তর॥
- ↑ অতীব যতনে=অতি স্নেহের সহিত।