কাইন্দা কাজলরেখা বাপের আগে কয়।
“এক আছে মির্ত[১] কুমার সে যে শুইয়া রয়॥
ঘরেতে ঘির্তের[২] বাতি রাত্রদিবা জ্বলে।
সর্ব্বাঙ্গে বিন্ধিয়া রইছে সুইচ আর শালে[৩]॥”
সদাগর ডাইক্যা কয় “পরাণের ঝি।
তোমার কপালে দুক্ষু আমি করবাম কি॥
যা কইল শুকপংখী কপালে কলিল।
ভাল করে বিয়া দিতে বিধি বাদী হইল॥
বাপ হইয়া মরার কাছে কন্যা দিলাম বিয়া।
গিরেতে[৪] ফিরিবাম আমি কিবা ধন লইয়া॥
শুন লো পরাণের ঝি কইয়া যাই আমি।
সাম্নে আছে মরা কুমার সেই তোমার স্বামী॥
সাক্ষী হইয়ো চন্দ্রসূরুয বনের দেবতা।
আজি হইতে ছাইড়া[৫] গেলাম পরাণের মমতা॥
সতী নারী হও যদি আমি যাই কইয়া।
ঘরে আছে মরা স্বামী লইও জিয়াইয়া[৬]॥
জন্মের মত থইয়া[৭] যাই আর না হইব দেখা।
সোয়ামীরে জীয়াইয়া তুমি রাখ্যো[৮] হাতের শাঁখা॥”
বাপে কান্দে ঝিয়ে কান্দে কান্দে পশুপাখী।
অরণ্য জঙ্গলায় কন্যা রইল সে একাকী॥
বাপের ভাঙ্গয়ে হিয়া কন্যার ভাঙ্গে বুক।
যাইবার কালে না দেখিল কেউ বা কার মুখ॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৮০
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২২
মৈমনসিংহ-গীতিকা
* * * *