‘পিতার স্নেহপাশে আবদ্ধ হইয়া আমি তখন যে বিমল আনন্দের আস্বাদ পাইয়াছিলাম, জীবনে তদপেক্ষা অধিক আনন্দের কল্পনা করা অসম্ভব।’
সম্রাট্ তাহার পর কিছুদিন মাহম্ ও গুল্কে লইয়া আগ্রায় কাটাইলেন। দিনগুলি যে অতীব শান্তি-সুখে অতিবাহিত হইয়াছিল, তাহাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু অধিক দিন একস্থানে বাস করা, চিরসঞ্চরণশীল, চঞ্চলপ্রকৃতি সম্রাটের স্বভাববিরুদ্ধ; বিশেষ সেকালের আগ্রার আশপাশের দৃশ্য তাঁহার নিকট নিরতিশয় অপ্রীতিকর বোধ হইত। সৌন্দর্য্য ও মাধুর্য্যের উপাসক সম্রাট্ ঢোলপুর ও সীক্রীকে মনের মত করিয়া সাজাইয়া তুলিতেছিলেন। তিনি মাহম্ ও গুল্কে লইয়া ঐ দুইস্থান দেখিতে গেলেন।
সীক্রীর উদ্যান-বাটিকার একাংশে বসিয়া বাবর আত্মকাহিনী ‘তুজুক্’ রচনা করিতেন। এইস্থানে একদিন একটি দুর্ঘটনা ঘটিল। মাহম্ ভগবদুপাসনায় রত; ভবনের সম্মুখে গুল্ বিমাতা মুবারিকার নিকট অবস্থিত। হঠাৎ শিশুসুলভ, ক্রীড়াচঞ্চল গুল্ বিমাতাকে করাকর্ষণ করিবার জন্য পুনঃ পুনঃ অনুরোধ করিতে লাগিল। কিছুতেই প্রতিনিবৃত্ত না হওয়ায় মুবারিকাকে কন্যার আবদার রক্ষা করিতে হইল। কিন্তু পার্ব্বত্যনন্দিনী মুবারিকার আকর্ষণ যতই মৃদু, যতই কোমল হউক না কেন, তাহা গুলের কোমল বাহুলতার পক্ষে বিষম হইয়াছিল। একখানি অস্থি স্থানচ্যুত হওয়ায় বালিকা চীৎকার করিয়া উঠিল। সুখের বিষয়, অবিলম্বে চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়ায় ব্যাপার গুরুতর
৬