তৎক্ষণাৎ খোদার আশীর্ব্বাদ মাগিয়া আশাপূর্ণ মধুর বাক্যে, স্বামীকে শান্তি ও সান্ত্বনা দিলেন।
কিন্তু বাদ্শাহের শেষের দিন সত্যসতাই সমীপবর্ত্তী হইয়াছিল। তিনি আনন্দের অবিশ্রান্ত কলরোলের মধ্যে থাকিয়াও কেমন করিয়া যে নিঃশব্দ-পদসঞ্চারী মৃত্যুর আসন্ন আগমনের আভাস পাইয়াছিলেন, তাহা বলা দুরূহ। যদিও কঠোর কার্য্য, সংগ্রামসঙ্ঘর্ষ তাঁহার স্বাস্থ্যের অন্তরায়স্বরূপ হইয়াছিল, তথাপি স্বাস্থ্যভগ্ন হইবার মত কোন লক্ষণ তাঁহার দেহে প্রকাশ পায় নাই। তিনি স্থান হইতে স্থানান্তরে পরিভ্রমণ এবং আরব্ধ-কার্য্য পরিদর্শনাদি করিয়া সময়ের সদ্ব্যবহার করিতেছিলেন। তাহার পর তাঁহার মৃত্যুর যে বিবরণ ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে, তাহাকে কোনক্রমেই স্বাস্থ্যহানি-ঘটিত মৃত্যু বলা যাইতে পারে না,—তাহা বাবরের অপূর্ব্ব আত্মবিসর্জ্জন বা ইচ্ছামৃত্যু!
যাহা হউক, শেষের দিনগুলি সম্রাটের পক্ষে বড় শান্তিপ্রদ হইতে পারে নাই। একদিন বাদ্শাহ্-পরিবারে শোকের এক মর্ম্মভেদী হাহাকার ধ্বনি উঠিল। পুত্র আল্ওয়ার মীর্জ্জা সম্রাটের স্নেহপূর্ণ কোমল হৃদয়ে শেল হানিয়া অকালে ইহসংসার হইতে অপসৃত হইল। শোকাবেগ কথঞ্চিৎ প্রশমিত হইতে না হইতেই সংবাদ আসিল, সম্রাটের প্রাণাধিক জ্যেষ্ঠপুত্র সিংহাসনের ভাবী উত্তরাধিকারী, হুমায়ূন্ মীর্জ্জা অসুস্থ—অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। উদ্বেগাকুলচিত্তে ত্বরায় বাদ্শাহ্ ও মাহম্ মথুরা পৌঁছিয়া পীড়িত পুত্রকে সঙ্গে লইয়া আগ্রা ফিরিলেন।
৮