এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোগল-বিদুষী
জেব্-উন্নিসা। এই শিক্ষার সুফল সম্পূর্ণভাবে আয়ত্ত করিতে কিছুমাত্র আয়ত্ত করেন নাই। নস্তালিক, নস্খ ও শিকাস্তা—এই তিন ছাঁদেই তাঁহার হাতের ফার্সী অক্ষর সুন্দর হইয়া উঠিয়ছিল। আর্বী ও ফার্সী উভয় ভাষাতেই তাঁহার যথেষ্ট অধিকার জন্মিয়াছিল। আরবীয় ধর্ম্মতত্ত্বে তিনি ব্যুৎপন্ন ছিলেন। বাদশাহ্ তাঁহার এই বিদুষী ধর্ম্মানুরাগিণী কন্যাটিকে অত্যন্ত স্নেহ করিতেন। অনেক সময় জেবের সহিত তাঁহার ধর্ম্মশাস্ত্রের আলোচনা হইত। ঐ আলোচনা কিরূপ, তাহা জেব্-উন্নিসাকে লিখিত, আওরংজীবের একথানি পত্রপাঠে অবগত হওয়া যায়। পত্রখনির কিয়দংশ আর্বী ও কিয়দংশ ফার্সীতে লিখিত। ‘ফয়াজ্-উল্-কওয়ানীন পুঁথির ৩৬৯ পৃষ্ঠায় ইহার যে নকল দেওয় হইয়াছে, তাহার মর্ম্মানুবাদ এইরূপ।—
“ভগবানকে বন্দনা করিয়া ও প্রেরিত-পুরুষকে প্রণিপাত করিয়া লিখিতেছি)।—খোদার আশীর্ব্বাদ তোমার উপর বর্ষিত হউক। পুণ্য মাস রম্জান্ আসিয়াছে। পরমেশ্বর তোমার উপর উপবাসরূপ কর্ত্তব্যের ভর অর্পণ করিয়াছেন। এই মাসে স্বর্গদ্বার উদ্ঘাটিত ও নরকদ্বার রুদ্ধ হয়, বিপ্লবকারী শয়তানেরা কারানিবদ্ধ থাকে। রম্জানের নের ধর্ম্মনিয়মাদি প্রতিপালনের জন্য আমরা উভয়েই যেন ভগবানের আশীর্ব্বাদ লাভ করিতে সমর্থ হই।
“বৎসে! তোমার ও আমার মধ্যে যে পত্র-ব্যবহার হয়, তাহাতে যেন আমাদের আধ্যাত্মিক কল্যাণ সাধিত হইতে পারে।
৬৪