পাতা:মোহন অম্‌নিবাস দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৩৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●> 。 মোহন অমনিবাস রমা চিঠির কাগজের প্যাডটির দিকে লখধ দটিতে একবার চাহিয়া জমাদ দিকে চাহিল, তাহার মুখে মদ হাসি ফুটিয়া উঠিল। সে কহিল, "তোমারে আর একটু কট দেব, জমাদার । আমাকে এক গ্রাস জল খাওয়াতে পারবে তুমি ?" | জমাদার রণজিৎ কুতাথ হইয়া গেল ! সে কহিল, “জল, মেমসাব ? একটা লিমনেড, কি জিঞ্জার বিয়ার, কিংবা আইসক্লীম !" এই বলিয়া সে রমার দিকে চাহিয়া দেখিল, সে মাথা নাড়িয়া অস্বীকৃতি জানাইতেছে । সে পনশচ কহিল, "তবে জলই আনছি, মেমসাব ।” জমাদার রণজিৎ দ্রতপদে চলিয়া গেল। রমা একখানি চিঠির কাগজ ও একখানি খাম লইয়া তাহার ভ্যানিটি কেসে পরিল। অবিলম্বে জল লইয়া জমাদার রণজিৎ প্রত্যাবতfন করিল । রমা হাসিয়া কহিল, "ধন্যবাদ ” এই বলিয়া রমা এক চুমকৈ জল পান করিয়া কাচের গ্লাসটি টেবিলের উপর নামাইয়া রাখিল এবং জমাদারের হাতে একটি টাকা দিয়া কহিল, “মিটি কিনে খেও, জমাদার । আমি তা’ হ’লে আজ আসি । কিন্তু আমার ভাই এলেই যেন আমি খবর পাই –পাব তো ?” টাকাটি হাতে লইয়া দীৰ সেলাম ঠুকিয়া জমাদার কহিল, "নিশ্চয়ই পাবেন। মেমসাব । কিন্তু আপনি কি চিঠি লিখবেন না " জমাদার রণজিৎ ঈষৎ বিস্ময়াপন্ন হইয়া কহিল । রমা উঠিয়া দাঁড়াইল ; কহিল, "না জমাদার, থাক, পত্র আর লিখব না। কতদিম ভাইকে দেখিনি, পল লিখে আর কি দেখার আনন্দ হবে, জমাদার ?” “তা’ ঠিক, মেমসাব।” এই বলিয়া রণজিৎ ওয়েটিং-রামের দ্বার খালিয়া সসম্প্রমে শির উচ্চ করিয়া দাঁড়াইল । রমা অপেক্ষাকৃত দ্রুত পদে বাহির হইয়া মোটরে আরোহণ করিলে ছয়টিতে ছুটিতে জমাদার রণজিৎ সিং আসিয়া মিলিটারী স্যালিউট দিল । মিলিটারী বটের লোহার কঠিন শব্দে বিলাসের মনে হইল, যেন একটা বলেট ছটে আসিয়া জমাদারের পায়ের নিকট চণে* হইয়া গেল । త్రి শোফার মোটর ছাড়িয়া দিল । వ్రైగ যতক্ষণ দেখা যায়, বাঙ্গালী জমাদার রণজিৎ সিং একদণ্টে মোটরের দিকে চাহিয়া রহিল ; পরে অকস্মাৎ একটা হিসহিস শব্দ তাহীর নাসিকার দুটি ছিদ্রপথে উখিত হইল। পরক্ষণেই তাহার স্মরণ হইল ষে, মেমসাহেবের রাঙা-সাহেব ভাই হোটেলে আসিলে কোন ঠিকানায় মেমসাহেবকে জানাইতে হইবে, তাহা জানিয়া লইতেই সে ভুল করিয়াছে । জমাদার রণজিৎ সিং তাহার সারা মিলিটারী জীবনের মধ্যে এই প্রথম মিলিটারী এটিকেট ভুলিয়া অকস্মাৎ সেইখানেই হাঁটু গাড়িয়া বসিয়া পড়িল । তাহার বক্ষের রাইফেল সশব্দে মাটির উপর খসিয়া পড়িল, কিন্তু সেদিকে তাহার লুক্ষেপ মাত্র ও রহিল না । হতভাগা বোধ হয় জীবনে এই প্রথম একখানি হাসিমুখ দেখিল, ষে-মুখ তাহার মুখের দিকে চাহিয়াই হাসিয়াছে ।