পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন 88 & তাহার সহিত রায় সাহেব না কি কিছু রসিকতা করিতে গিয়াছিলেন, হতভাগিনীর তাহা সহ্য না হওয়ায় সরিয়া পড়িয়াছে। এখন একজন পাচিকার জরুরী প্রয়োজন। রায় সাহেব ভৃত্যদের উপর জরুরী আদেশ দিয়াছেন, যেমন করিয়াই হীেক অদ্য সন্ধ্যার পূর্বে একজন পাচিক চাই। ভূত্যেরা অত্যন্ত বিপদে পড়িয়াছে। মোহন শুনিল। সে কহিল, “কুছ পরোয়া নেই, রাম। আমার এক মাসি রাঁধুনীর কাজ করেন। এখন বেচার বসে আছে ; তুমি যদি একটু চেষ্টাচরিত্র করে তাকে কাজে লাগিয়ে দাও, তা’ হ’লে পরম উপকৃত হই, ভাই। যা টানাটানির সময় চলেছে।” ইহা বলিয়া মোহন একখানি দশ টাকার নোট ভূত্যের হাতে গুজিয়া দিল। ভৃত্য খুশী হইয়া কহিল, “তোমার আবার টানাটানি, বন্ধু। যার কাছে দশ টাকার নোটের কম খুচরা থাকে না, তার টানাটানির কথা শুনলে হাসি পায়।” ভৃত্য না হাসিলেও মোহন হাসিয়া ফেলিল। সে কহিল, “ভাই হে, আমার না হয় দু'দশ টাকা আছে। কিন্তু এই টাকা থেকে যদি আবার মাসি-পিসির খরচা জোগাতে হয়, তাহলে তো আর বাচি না। মাসি আমার আবার পানদোক্তা খান ।” ভৃত্য রামচরণ কহিল, “তবে কখন পাঠাবে মাসিকে ?” “বিকালে ঠিক তিনটার সময়।” মোহন কহিল। সহসা রামচরণের স্মরণ হওয়ায় সে কহিল, “সার্টিফিট আছে তো! নইলে রায় সাহেব বড় একটা কারুকে বিশ্বাস করে না।” - মোহন কহিল, “এই জ্বালালে, বাবা! কিন্তু কা’র সার্টিফিট্‌ হ’লে কাজ চলবে বল তো ?” ভৃত্য হাসিয়া কহিল, “তা’র কি আর বাধা ধরা নিয়ম আছে। যার কাছে মাসি আগে চাকরি করেছে, তাদের হলেই হ’ল।” দিন কতক ভেরাল্ডা ভেজেছিল, তারপর কাশিমবাজারের মহারাজার বাড়িতে পুলি-পিঠে রাম বাধা দিয়া কহিল, “আরে বাবা! আবার তারপর! এ তোমারকি মাসি রে বাবা! রায় সাহেব সার্টিফিটু দেখলে একেবারে জড়িয়ে ধরবে, চাদ" রামচরণ ভীত হইয়া কহিল, “আরে দাদা, ওটা একটা কথার কথা বলেছি। বলতে চেয়েছি যে, এমন মাসিকে চাকরি না দিয়ে রায় সাহেব আর পারবেন না।” মোহন দাড়াইয়া কহিল, “তবে এখন আসি।” “এস দাদা। কাল আবার এস। নতুন খবর জেনে যেও। রামচরণ দুই হাত মাথায় ঠেকাইয়া কহিল, “নমস্কার।’ “নমস্কার!” মোহন একবার চারিদিকে চাহিয়া দেখিল, একজন কনস্টেবল হাতে খইনি দলিতে দলিতে তাহদের দিকে আসিতেছে। মোহন পাশ কাটাইয়া চলিয়া যাইতেছিল,