পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σθε যশোহর-খুলনার ইতিহাস 蠟 আবিষ্কৃত হইল, তাহার নাম হইল যশোরেশ্বরীপুর, উহাই সংক্ষিপ্ত হইয়া হইল ঈশ্বরীপুর। ঈশ্বরীপুর বলিলে প্রতাপাদিত্যের ধূমঘাট-যশোরের একাংশকে বুঝাইত। এখনও তাঁহাই বুঝায় ; এখনও দক্ষিণাঞ্চলের কোন লোক ঈশ্বরীপুর বা নিকটবৰ্ত্তা কোন স্থানে যাইবার সময় “যশোর যাইতেছে” বলিয়া পরিচয় দেয় । সে অঞ্চলে এখনও “যশোর বলিলে ইংরাজ আমলের আধুনিক জেল যশোহর বুঝায় না। একস্থানের যশঃ হরণ করিয়া অন্তস্থানে লইতে লইতে যশোহর নাম যে কত স্থানই ভ্রমণ করিল ! কিন্তু যেখানেই গিয়াছে, যশঃ রক্ষা করিতেছে, এখন শেষ রক্ষা করিতে পারিলে হয়। த যশোরেশ্বরী মূৰ্ত্তির আবির্ভাব হওয়া মাত্র প্রতাপ ভক্তি-বিহবল হইয়া পড়িলেন। অচিরে পার্শ্ববৰ্ত্তী জঙ্গল বহুদূর পর্যন্ত পরিষ্কৃত হইল : স্তুপীকৃত ইষ্টক সরাইয়৷ ফেলা হইল ; প্রতাপাদিত্য মায়ের শ্ৰীমন্দির নিৰ্ম্মাণের জন্য উপযুক্ত আদেশ দিলেন। পীঠস্থানের সন্নিকটে তিনি দুর্গের স্থান নির্ণয় করিয়াছিলেন বলিয়৷ র্তাহার আনন্দ আর ধরে না। দুর্গ, সহর ও মন্দিরের গঠনকাৰ্য্য পূর্ণবলে চলিতে লাগিল। তন্মধ্যে মন্দিরের কৰ্ম্ম যাহাতে যথাসম্ভব সত্বরতার সহিত সুচারুরূপে সম্পন্ন হর, তাহারই চেষ্টা করিতে লাগিলেন। মন্দিরের ভিত্তি খনন কালে মৃত্তিকার নিয়ে যে কত ইট কাঠ বাহির হইতে লাগিল, তাহার ইয়ত্ত নাই। মায়ের মূৰ্ত্তিও নূতন নহে ; মন্দিরও কতবার পড়িয়াছে, কতবার গড়িয়াছে, তাহ বলা যায় না। কাল তাহার একমাত্র সাক্ষী । প্রাচীন যশোর একটি প্রসিদ্ধ পীঠস্থান । ভবিষ্যপুরাণ হইতে দেখিতে পাই, এখানে সতীদেহ হইতে বাহু ও পদ পতিত হয় । কবিরাম কৃত ‘দিগ্বিজয় প্রকাশ” নামক প্রাচীন গ্রন্থ হইতে জানা যায়, পূৰ্ব্বকালে অনরি নামক একজন ব্রাহ্মণ *দেবীর জন্য এখানে শতদ্বারযুক্ত এক বিরাট মন্দির নিৰ্ম্মাণ করেন। পুনরায় ধেনুকৰ্ণ নামক এক ক্ষত্রিয় নৃপতি তীর্থদর্শনে আসিয়া মায়ের ভগ্নমন্দির স্থলে এক নূতন মন্দির প্রস্তুত করিয়া দেন। সুন্দরবনের ইতিহাসে দেখাইয়াছি যে, সুন্দরবন বহুবার উঠিয়াছে, পড়িয়াছে। কখনও এখানে জন কোলাহলময় লোকালয় ছিল ; কখন তাহ উৎসল্প হইয়া মনুষ্যশূন্ত হইয়াছে। একে প্রস্তরপূন্ত বঙ্গদেশ, তাহাতে লবণাক্ত বায়ুপ্রবাহ, উভয় কারণে প্রাচীন অট্টালিকা বিনষ্ট হয়। যশোরেশ্বরীর মন্দিরও এইভাবে কতবার নষ্ট হইয়াছে। মন্দির যাইতে