3е е যশোহর-খুলনার ইতিহাস বহুদিন পর্য্যন্ত সৰ্ব্বজাতীয় প্রজাবর্গের প্রতিভাজন হইয়াছিলেন । সুন্দর বনের নদীপথে যখন তখন যে সব খণ্ড যুদ্ধ হইত, তাহার কোন বিবরণী নাই। কিন্তু যে সুন্দরবনে কোন কালে লোকের বসতি ছিল কিনা বলিয়া কতজনের সন্দেহ উপস্থিত হইয়াছে, প্রতাপাদিত্যের রাজত্বকালে সে সুন্দর বনের জনবহুলতা এবং ৰিপুল সৈন্যবল সংগ্রহের কথা দেশের এক নূতন অবস্থার কথা বিজ্ঞাপিত করে। এখন হয়তঃ কোন ফিরিঙ্গি দসু্যর হত্যার জন্ত প্রতাপাদিত্যের চরিত্রে কালিম অর্পণ করিবার জন্য আমরা মঙ্গব্যস্ত, কিন্তু সে হত্যার পশ্চাতে দস্থ কর্তৃক আমাদের স্বজাতীয় ও স্বদেশীয়দিগের হত্যার কি শোণিত-স্রোত প্রবাহিত ছিল, তাহার আমরা সন্ধান রাখিব না। এই সকল দস্থ্যগণ শুধু দেশের মধ্যে, দেশীয়দিগের রাজনৈতিক বিবাদ-বিসম্বাদের মধ্যে প্রবেশ পূৰ্ব্বক কত ষড়যন্ত্রর হষ্টি করিয়া, স্বাধীনতা-প্রয়াসী প্রতাপের রাজনৈতিক জীবনকে কত বিড়ম্বিত করিয়াছিল, তাঙ্গ ভাবিয়া দেখিবার উপযুক্ত বিষয়। এই দম্বাদলের জন্ত তাহাকে পর্যাপ্ত যুদ্ধায়োজন করিতে হইয়াছিল, এবং তাহার নৌসেনানীদিগকে পাশ্চাত্য প্রণালীতে কামান সাজাইয়া সৰ্ব্বদা সতর্ক হইয়া থাকিতে হইত। এই একাগ্র চেষ্টার ফলে ভাগীরথীর মোহান হইতে মধুমতীর মোহান পর্যান্ত সমগ্র যশোর-রাজ্যের দক্ষিণভাগ এমন সুন্দরভাবে সুরক্ষিত হইয়াছিল, যে তাহা ভাবিলেও বিস্ময়ান্বিত হইতে হয়। এই সকল স্থানে প্রত্যেক বড় নদীর মোহানায় বা নদী-সঙ্গমে দুর্গ বা নৌ-সেনা রাখিবার ব্যবস্থা ছিল। হয়তঃ সকল সন্ধান আমরা দিতে পারিলাম না, এবং পারিবারও সম্ভব কম। কিন্তু আমরাষ্ট বহুসন্ধানের ফলে যে সংবাদ দিতেছি, তাহাতেই প্রকৃত অবস্থার একট মোটামুটি আভাস পাওয়া যাইবে। পশ্চিম প্রান্ত হইতে আরম্ভ করিয়া আমরা নদীপথে দেশ রক্ষার প্রণালীটি দেখাইতে চেষ্টা করিলাম। ভাগীরথীর মুখে (১১) সগরদ্বীপে একটি প্রধান দুগ ও নেীসংস্থান ছিল। কেহ কেহ অনুমান করিয়াছিলেন যে সগরে প্রতাপাদিত্যের প্রধান রাজধানীই ছিল, সে মতের প্রতিবাদ কল্পে আমাদের যাহা বলিবার ছিল, পূৰ্ব্বে বলিয়াছি এবং সেই প্রসঙ্গে সগরদ্বর্গের পার্শ্ববৰ্ত্ত স্থানে যে সমস্ত প্রাচীন ভগ্নাবশেষ দেখা গিয়াছে, তাহার ও বিবরণ দিয়াছি। সুতরাং এখানে সগরদুর্গ সম্বন্ধে পুনরায় কিছু বলিবার প্রয়োজন নাই।
পাতা:যশোহর-খুল্নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৪৬
অবয়ব