পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতাপের রাজত্ব ՀՖԳ বহু গল্প এখনও প্রদেশে প্রচলিত আছে। কোন সময়ে কোন ঘটনা ইয়াছিল, আমরা তাহার আনুপূৰ্ব্বিকতার প্রতি লক্ষ্য না করিয়া কয়েকটি গল্প এখানে প্রকাশ করিতেছি। এ সকল গল্প অল্পবিস্তর অতিরঞ্চিত হওয়৷ অসম্ভব নহে ; কিন্তু ইহা একেবারে ভিত্তিহীন বলিয়া উড়াইয় দেওয়া যায় না। দেব-চরিত্রের পরিচয় পাইলেই মানুষে তাহ লোক-শিক্ষার জন্ত সম্পত্তির মত ব্যবহার করে এবং উত্তরাধিকার স্বরূপ পরবংশীয়গণের জন্ত বাথিয়া যায়। পুরুষপরম্পরায় উহ! উপদেশ দিবার জন্ত আলোচনার বিষয় হইয় থাকে। অভিষেক বা অন্ত কোন উৎসব উপলক্ষে একদিন প্রতাপাদিত্য মহারাণীর সহিত সিংহাসনে উপবিষ্ট থাকিয়া সমাগত ব্রাহ্মণ ভিক্ষুকে স্বর্ণমুদ্র দান করিতেছিলেন। প্রতাপাদিত্যের নির্দেশ মত মঙ্গরাণীই হাতে করিয়া মুদ্র নিতেছিলেন। দৈবাৎ এক ব্রাহ্মণকে দিবার সময় মহারাণীর হস্ত হইতে দানের মুদ্রার একটি নিম্নস্থ পাত্রে পড়িয়া যায় ; তিনি তৎক্ষণাৎ হাত দিয়া পাত্র হইতে একটি মুদ্র উঠাইয়া দিতে যাইতেছিলেন, এমন সময়ে প্রতাপ জিজ্ঞাসা করিলেন, ঠিক যে মুদ্রাটি হস্তম্বলিত হইয়া পড়িয়াছিল, ঠিক সেইটিষ্ট কি তিনি তুলিতে পারিয়াছেন। মহারাণী ইহা নিশ্চিত করিয়া বলিতে পরিলেন না। তখন প্রতাপ বলিলেন, “ব্রাহ্মণকে দিবার জন্ত ঘাহা হাতে করিয়া উঠান হইয়াছিল, তাহ দেওয়াই হইয়াছিল বলিয়া ধরিতে হইবে ; যখন তাঙ্গ হইতে হস্তচু্যত মুদ্রাটি খুজিয়৷ পাওয়া গেল না, তখন তিনি কিছুতেই দত্তাপগরী হইতে পারেনুন । মহারাজ তখন অম্লান বদনে হুকুম দিলেন, “পাত্রস্থ সমস্ত মুদ্র ব্রাহ্মণকে দান কর” । ভিক্ষুক ব্রাহ্মণের ভাগ্য খুলিয়া চিরদরিদ্রত ঘুচিল । ব্রাহ্মণ দুষ্ট হস্তে আশীৰ্ব্বাদ করিয়া প্রস্থান করিলেন । প্রবাদ আছে, দিল্লী বা আগ্র হইতে এক ভাট কবি ভিক্ষার জন্য যশোহরে আসেন। রাজধানী হইতে প্রতাপের অনুপস্থিতি বশতঃ কিছু দিন অপেক্ষা করিয়া পরে একদা স্থানান্তরে প্রতাপের সঠিত সাক্ষাৎ করিয়া প্রার্থনা জানাইলেন। মহারাজ র্তাহাকে রাজসভায় উপস্থিত হষ্টতে বলিলেন, কিন্তু তিনি আর অধিক দিন বিলম্ব করিতে সম্মত না হওয়ায় অবশেষে তাহাকে একটি অশ্ব ও সহস্র মুদ্র পুরস্কার দিবার আদেশ দেন। ভাট কবি অবাক হইয়া গেলেন, অবশেষে মুক্তকণ্ঠে বলিলেন, ভারতেব কোন স্থানে তিনি এমন দানশীলতা দেখেন