বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উড়িষ্যাভিযান ও বিগ্রহ-প্রতিষ্ঠা ર(t(t পরিচয় হইয়াছিল। এবং মোগলের সহিত সন্ধি হওয়ার পর হয়তঃ মোগলপক্ষের জ্ঞাতসারেই জমাল থ যশোহর সরকারে কার্য্য গ্রহণ করিয়াছিলেন। এখনও প্রতাপের সহিত মোগলের প্রকাগু বিবাদ হয় নাই। ১৫৯৩ খৃষ্টাম্বের প্রথমভাগে প্রতাপাদিত্য বিগ্ৰহম্বর লইয়া বন্ধুবৰ্গ সহ যশোহরে পৌছিলেন। অর্থ দিয়া সেবাইতদিগকে প্রলুব্ধ করিয়া অথবা বল প্রয়োগ করিয়া, কি ভাবে তিনি বিগ্ৰহ সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন, তাহা জানিবার উপায় নাই। এমন সুন্দর গোবিন্দদেব বিগ্রহ যে কেহ অর্থের লোভে সহজে হস্তচু্যত করিয়াছিল, এমন বোধ হয় না। তবে বিগ্রহের সেবার জন্ত তিনি বল্লভাচার্য্য নামক একজন উড়িয়া ব্রাহ্মণকে যে সঙ্গে করিয়া আনিয়াছিলেন, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। হয়তঃ বিগ্রহটি কোন প্রসিদ্ধ রাজা বা জমিদারের ছিল, প্রতাপাদিত্য বলপ্রয়োগে উহা হস্তগত করিয়া, পরে অর্থ দিয়া উহারই সেবাইতকে প্রলুব্ধ করিয়া সঙ্গে আনিয়াছিলেন। বসন্ত রায় গোবিন্দদেব বিগ্রহ দেখিয়া আনন্দে নৃত্য করিতে লাগিলেন। বাস্তবিকই এমন ঐবিগ্ৰহ অতীব দুৰ্ল্লভ পদার্থ। বিগ্রহ অনেক দেখিয়ছি, কিন্তু এমন সৌষ্ঠব, এমন দিবোজ্জল নয়নভঙ্গি আর দেখি নাই। অনতিবিলম্বে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার জন্ত বিপুল আয়োজন চলিতে লাগিল। অচিরে উড়িষ্যার যুদ্ধ বিগ্রহ অপেক্ষ এই দেব-বিগ্রহের খ্যাতি দেশময় মণ্ডিত হইয়া পড়িল। “সারতত্ব তরঙ্গিনীতে" আছে ঃ– - “নীলাচল হইতে গোবিন্দকে আনি রাখিলেন কীৰ্ত্তি যশঃ ঘোষয়ে ধরণী” আমরা এ স্থলে অগ্রে ৮গোবিন্দদেব বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা, মন্দির ও র্তাহার বর্তমান অবস্থার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস দিয়া পরে শিবলিঙ্গের কথা বলিব। এক স্থানে ধারাবাহিক বিবরণী থাকিলে পাঠকের বুঝিবার পক্ষে সুবিধা হইবে। ** ধূমঘাট দুর্গ হইতে তিন মাইল উত্তরে দক্ষিণ-বাহিনী যমুনার পশ্চিম কূলে গোপালপুর নামক স্থানে গোবিন্দদেব বিগ্রহের জন্ত মন্দির নিৰ্ম্মিত হয়। মন্দির একটি নহে, চত্বরের চারিধারে চারিটি উচ্চ মন্দির নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল ; উহার মধ্যে কেবল মাত্র পূর্ব পোতার মন্দিরটি ভাবস্থায় দণ্ডায়মান আছে অপর তিন পোতার মন্দিরগুলি ভাঙ্গিয় পড়িয়া প্রাঙ্গন জুড়িয়া স্তুপীকৃত হইয়া রহিয়াছে।