পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম পরিচ্ছেদ । সুন্দরবনের জীবজন্তু । প্রাকৃতিক স্বাস্থ্য বিবেচনা করিলে সুন্দরবনে জীবজন্তুমাত্রের অবনতির ও নিৰ্ব্বীৰ্য্যতার কল্পনা করা যায়। আবার জীবজন্তুর অবস্থা দেখিয়া যদি স্বাস্থ্যের প্রমাণ করিতে হয়, তাহা হইলে সুন্দরবন ভারতবর্ষের অন্য কোন স্থান অপেক্ষ স্বাস্থোর হিসাবে নিকৃষ্ট বলা যায় না। সুন্দরবনের সুন্দর গাছ ও প্রকাও লতা, সুন্দরবনের ব্যাঘ্র ও কুম্ভীর, মুন্দরবনের মহাকায় সর্প ও সবল পক্ষী স্বাস্থ্যহীনতার পরিচয় দেয়ই না, বরং এক প্রকার আভ্যন্তরিক বীৰ্য্য ও সবলতার সম্পূর্ণ নিদর্শন প্রদান করে। কেহ বলেন, বাঙ্গালীর মত দুৰ্ব্বল ও কাপুরুষ জাতি আর নাই ; আবার কেহ বলেন, যে দেশের জলবায়ু বঙ্গ-ব্যান্ত্রের স্বষ্টি করিয়াছিল, এবং প্রতাপাদিতোর যুগে যে দেশের কোণে কোণে বহু নরব্যান্ত্রের উদ্ভব হইয়াছিল, সে দেশ কখনও নিৰ্ব্বীৰ্য্যতার কালিমামণ্ডিত হইতে পারে না। বাঙ্গালীর চরিত্রে কলঙ্কের রেখা থাকিতে পারে ; কোন জাতির বা সেরূপ কিছু নাই ? তবে সে কলঙ্কের সহিত কাপুরুষতার যে কোন অনিবাৰ্য্য সম্বন্ধ আছে, এরূপ কল্পনা করা সমীচীন নহে। সুন্দরবনের বিশাল অরণ্য ও বিরাট নদীসংস্থান সৰ্ব্বত্রই তাঁহাকে ভীষণ করিয়া রাখিয়াছে। তাহার স্থলভাগে ব্যাঘ্ৰাদি শ্বাপদকুল এবং জলে কুম্ভীর এই ভীষণতাকে ভীষণতর করিয়াছে। অন্তান্ত প্রদেশের লোকে মনে করে যে, যে দেশে “জলে কুমীর, ডাঙ্গায় বাঘ” সে দেশে লোকে বাস করে কিরূপে ? এই বিশেষত্বের কথা মনে করিয়া নিম্নবঙ্গের প্রসঙ্গমাত্র অন্যান্ত লোকের মনে আতঙ্কের সঞ্চার হয়। বাস্তবিকই সুন্দরবনের স্থলজন্তুর মধ্যে ব্যাঘ্ৰ ( Tigris Regalis ) সৰ্ব্বপ্রধান। নানা দেশে নানাজাতীয় ব্যাঘ্ৰ দেখিতে পাওয়া যায়, কিন্তু সুন্দরবনের ব্যান্ত্রের মত হিংস্র, এমন বলবান, এমন দৰ্পশালী, এমন ভীমমূৰ্ত্তি এবং এমন শিকারকুশল বন্যজন্তু আর দেখা গিয়াছে কিনা সন্দেহ। এই জন্ম