পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৩৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭૨ যশোহর-খুলনার ইতিহাস। সৰ্ব্বদা একস্থান হইতে অন্যত্র পলায়নের জন্য এরূপ ভাবে প্রস্তুত থাকিত যে তাহার এ যুগে কোন মৌলিক চিন্তা বা বিদ্যাচর্চা করে নাই, কোন ইতিবৃত্ত, গোষ্ঠকথা বা বংশকারিকাদির রচনা করে নাই ; এমন কি এ যুগে বৌদ্ধগণ কোন পুস্তক রচনা ত দূরের কথা, কোন প্রাচীন পুথি হাতে লিখিয়া নকল করিতেও পারিত না। এ পর্য্যন্ত এ যুগে মাত্র তিন খানি পুথি নকল করা হইয়াছিল, দেখা গিয়াছে। সে তিনখানিই বৌদ্ধ পুথি এবং উহা তিন জন কায়ন্থে নকল করিয়াছিল। তন্মধ্যে বঙ্গাধিকারী হরিনারায়ণ মিত্র যে পুথিখানি নকল করেন, তাহার নাম, “সভাতরঙ্গিণী”। বিদ্যাচর্চাদির যখন এই দশা, তখন সে যুগের ইতিহাস কেন পাওয়া যায় না, তাহ বলাই বাহুল্য। এই জন্তই এ যুগকে তামসযুগ বলিয়াছি। এই যুগে কিছুদিন পর্যন্ত যশোহর-খুলনায় পূৰ্ব্ববঙ্গের সেনরাজগণের শাসন চলিয়াছিল। প্রথম প্রথম র্তাহারা পূৰ্ব্ববঙ্গ হইতে কর সংগ্ৰহ করিতেন। কিন্তু কেহ বিদ্রোহী হইলে তাহ দমন করিবার সাধ্য ছিল না ; কারণ বিদ্রোহিগণ আবগুক হইলে পশ্চিম বঙ্গের পাঠান শাসকের শরণাপন্ন হইয়া আত্মরক্ষা করিত ও এককালীন কিছু অর্থাদি উপঢৌকন দিয়া দেশের মধ্যে নিজের স্বাধী নতা কিনিয়া লইত। এইরূপে বর্তমান যশোহরের উত্তরাংশে মাগুরা ও ঝিনেদহ মহকুমার অন্তর্গত প্রদেশে সে সময় কতকগুলি ক্ষুদ্র জমিদারের আবির্ভাব হইয়াছিল। এই সময় হইতে শৈলকুপার উন্নতি আরম্ভ হয়। হিন্দুর মধ্যে অনেক আত্মকলহ পাঠানের রাজ্যবিস্তারের পথ পরিষ্কার করিয়া দিয়াছিল। এইভাবে ২০২২ জন পাঠান নৃপতি দিল্লীর অধীন থাকিয় ১৪০ বৎসর যাবৎ বঙ্গদেশ শাসন করে। তন্মধ্যে শতাধিক বৎসর কাল পুৰ্ব্ববঙ্গ তাহাদের করায়ত্ত হয় নাই। ফিরোজ সাহের সময় পূৰ্ব্ববঙ্গ অধিকৃত হইয়াছিল। ১৩৩৯ খৃষ্টাব্দে ফকরউদ্দীন পূৰ্ব্ববঙ্গে এবং সামসুদ্দীন ইলিয়াস পশ্চিমবঙ্গে স্বাধীনত ঘোষণা করেন এবং ইলিয়াসই পরে সমগ্র বঙ্গের স্বাধীন পাঠান নৃপতি হন। এই সময় হইতে বঙ্গদেশ বাঙ্গাল নামে আখ্যাত হয়। ইলিয়াস সবল হন্তে দেশ শাসন করিতেন। তাহার মৃত্যুর পর অল্পকাল মধ্যে মেশে নানা অরাজকতা উপস্থিত হয়। এই সময় দেশীয় জমিদারের প্রাধান্ত লড়ি করেন। গণেশ পূৰ্ব্বে উত্তরবঙ্গে ভাতুরিয়া পরগণার জমিদার ছিলেন। তিনি