পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খ জাহানের কার্য্যকাহিনী । RᏜᎼ ও অনুচরবর্গের জন্ত খাদ্য প্রস্তুত করিয়া রাখিতে পূৰ্ব্বে প্রেরণ করেন। উহার যশোহরে পৌঁছিয়া খাদ্যের চেষ্টা করিতে থাকেন কিন্তু সময় মত খাদ্য প্রস্তুত হইয়াছিল না। খাঁ জাহান পৌঁছিয়া দেখিলেন খাদ্য প্রস্তুত নাই, এজন্য তিনি এস্থানে অবস্থান করিলেন না এবং গরিবসাহ ও বেরামসাহকে সঙ্গে লইলেন না। তদবধি ঐ দুইজন এইস্থানে রহিয়া গেলেন। এটি একটি গল্প কথা। মোটকথা, গী জাহানের উদ্দেশ্য ছিল—মুসলমানধৰ্ম্ম প্রচার ও রাজ্য প্রতিষ্ঠা। তিনি ভৈরবকুলে মুড়লীতে একটি প্রধান কেন্দ্র সংস্থাপন করিলেন। ক্রমে ঐ স্থানে একটি সহর হইল। উহার নাম হইল মুড়লী-কসবা । কস্ব শব্দে সঙ্কর বা নগর বুঝায়। এইরূপ ভাবে সহর প্রতিষ্ঠা করিয়া গঁ জাহান অগ্রসর হইতে থাকিলেন। মুড়লীতে ধৰ্ম্মপ্রচারকার্য্যে গরিবসাহ ও বেরামসাহকে রাখিয়া গেলেন। র্তাহার নানা বুজরুকী বা অলৌকিক শক্তি এবং সাধুজীবনের আদর্শ দেখাইয়৷ বহু লোককে মোহিত ও বশীভূত করিলেন। অনেকে মুসলমানধৰ্ম্ম পরিগ্রহ করিল ; যাহারা মুসলমান হইল না, তাহারাও ফকিরদিগকে দেবতার মত ভক্তি করিত। এখনও সে ভক্তি চলিতেছে। এখনও দূরবর্তী স্থানের লোকেও মোকৰ্দমা করিতে বা অন্ত কার্য্যে যশোহরে আসিলে গরিবসাহের দরগায় সেলাম ও সিন্না না দিয়া কোন কাৰ্য্য করে না । পুরাতন কস্বায় যশোহরের ফৌজদারী আদালতের অনতিদূরে ভৈরবকুলে গরিবসাহের ক্ষুদ্র মসজিদটি সৰ্ব্বজাতীয় লোকের তীর্থস্বরূপ হইয়া রহিয়াছে। বেরামের দরগা আরও পশ্চিমদিকে গেলে সাহেবদিগের গোরস্থানের সন্নিকটে দেখিভে পাওয়া যায়। সাধুত যে জাতিভেদের গণ্ডীর বহির্ভূত এবং সৰ্ব্বজাতির ভক্তির জিনিস, এই সাধু ফকিরদিগের দরগা তাহা শিক্ষা দিতেছে। মুড়লী কসবা হইতে খাঁ জাহানের প্রচার-বাহিনী দুইভাগে বিভক্ত হয়। একদল সোজা দক্ষিণমুখে কপোতাক্ষের পূর্বধার দিয়া ক্রমে মুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে; অন্যদল পূৰ্ব্বদক্ষিণমুখে ক্রমে ভৈরবের কুল দিয়া বাগেরহাট অঞ্চলে পৌছে। সঙ্গে সঙ্গে এই উভয় পথে দুইটি রাস্ত বা জাঙ্গাল প্রস্তুত হইয় যায়। বারবাজার হইতে যে রাস্ত যশোহর পর্য্যন্ত আসিয়াছে, তাহার পূৰ্ব্বনাম গাজীর জাঙ্গাল। আমরা গাজীর কথা পরে বলিব। জনৈক গাজী বারবাজারে মুসলমানপ্রতিপত্তি স্থাপন করেন। তাহার নামানুসারে উক্ত গাজীর জাঙ্গাল ।