পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨Rર যশোহর-খুলনার ইতিহাস। নাম হইয়াছিল। যশোহর হইতে দুইদিকে দুইটি থাঞ্জলির জাঙ্গাল আরম্ভ হইয়াছে। এক প্রবীণ পুরুষ র্থ জাহানের প্রধান পার্শ্বচর ছিলেন ; তাহার অন্ত কি নাম ছিল জানা যায় না ; তিনি সাধারণতঃ বুড়া খা নামেই পরিচিত। ইহার সঙ্গে ইহার পুত্র ফতে খ ছিলেন। উভয়ই সাহস, কৰ্ম্মতৎপরতা ও ধৰ্ম্মনিষ্ঠার জন্ত বিখ্যাত ছিলেন। দক্ষিণদিকে আবাদ পত্তন ও ধৰ্ম্মপ্রচারের ভার এই পিতাপুত্রের উপর দিয়া, নিজে ভৈরবর্তীর দিয়া পূৰ্ব্বমুখে অগ্রসর হইয়াছিলেন। বুড় খ। ফতে খা বহুসংখ্যক সৈন্যসামন্ত ও সাধু ফকির সঙ্গে লইয়া মুড়লী হইতে দক্ষিণদিকে গিয়া প্রথমতঃ খানপুরে অবস্থান করেন। তাহার রাস্তা প্রস্তুত করিতে করিতে, খ জাহানের উপদেশ ও দৃষ্টাস্তে উভয়পাশ্বে দীঘি খনন করিয়া লোকের জলকষ্ট নিবারণ করিতে করিতে অগ্রসর হইতেছিলেন। ধানপুরে বহুলোকে ইসলাম ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়াছিল এবং তদবধি বহু নিষ্ঠাবান্‌ মুসলমানের বাস জন্ত এ স্থান পবিত্র হইয়াছিল; এখনও মুসলমান অধিবাসীর ংখ্যা খুব বেশী, কিন্তু সে নিষ্ঠা এক্ষণে বিবাদ-বিসম্বাদে পৰ্য্যবসিত হওয়ায় অধিবাসীরা মোকৰ্দমার খরচে উৎসন্ন যাইতেছে । এখান হইতে খ জাহানের দল কেশবপুরের পথে বিদ্যানন্দকাটির নিকট আসিয়া আড্ডা করেন। এখানে একটি প্রকাও দীঘিকা খনিত হয়। আমরা পূৰ্ব্বে বলিয়াছি বিদ্যানন্দকাটি একটি প্রাচীন গ্রাম, এখানে পাঠানযুগের পূৰ্ব্বকালীন কীৰ্ত্তিচিহ্নও ছিল এবং বহুসংখ্যক বৌদ্ধের বাস ছিল। বিদ্যানন্দকাটির দীঘি উত্তর দক্ষিণে দীর্ঘ ; সম্ভবতঃ কোন পুরাতন বৌদ্ধযুগের দীঘি পুনরায় খনন করা হয় ; ইহার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬০০ হাত এবং প্রস্থ ৭০০ হাত হইবে। প্রতিবৎসর এই দীঘির দক্ষিণ পাহাড়ের উপর দোলপূজার দিন খাঁ জাহানের উদ্দেশুে মেলা হয়। ধী জাহান এতদঞ্চলের লোকের নিকট পীর বা দেবতার মত সন্মানিত হন। লোকের গাভী দুগ্ধবতী হইলে প্রথম দুগ্ধ তাহার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করিয়া যায়। একসময় এমন ছিল যে স্থানীয় লোকে কোন ইমারত নিৰ্ম্মাণ করিবার পূৰ্ব্বে ধী জাহানের স্মৃতিস্থানের উপর একখানি ইট না লাগাইয়া কাৰ্য্যারম্ভ করিত না। উক্ত দীঘি খনন করিবার সময় খ জাহান স্বয়ং কিছুদিন আসিয়া এখানে ছিলেন এবং হয়ত র্তাহার কোন অনুচরের স্মৃতিরক্ষা জন্ত তাহার নামানুসারে নিকটবৰ্ত্তী সারবাবাদ ।