পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ—অদ্যান্য প্রাকৃতিক বিশেষত্ব । €Go পূৰ্ব্বে দক্ষিণ অঞ্চলে লোণাজল জালাইয়া প্রচুর পরিমাণে লবণ প্রস্তুত করিত। সন্দ্বীপ প্রভৃতি দ্বীপ হইতে শত শত জাহাজ লবণ বোঝাই করিয়া বিদেশে যাইত। এখন দেশীয় লোকের ব্যবসায় নাই, এমন কি নিজেদের ব্যবহারোপযোগী লবণটুকুও প্রস্তুত করিতে পারে না। গবর্ণমেণ্ট লবণের একচেটিয়া ব্যবসায় হাতে লইয়াছেন। এখন লোকে পরের লবণই খায়, তবুও তাহার মর্য্যাদা রক্ষা করে। জীব জন্তু-জীব-জন্তু বা বৃক্ষলতা সম্বন্ধে সুন্দরবন সম্পূর্ণ বিভিন্ন। এজন্য তাহার বিশেষ বিবরণ পৃথক্ ভাবে প্রদত্ত হইল। এস্থলে উত্তর ভাগের কথাই আমাদের আলোচ্য। যশোর-খুলনার লোকালয়ে গো, ছাগ, কুকুর ও বিড়াল গৃহপালিত পশু। মেষ ও মহিষ যশোরের উত্তর ও পশ্চিম ভাগে আছে বটে, কিন্তু ইহারা খুলনার পূৰ্ব্ব দক্ষিণে দীর্ঘজীবী হয় না। এমন কি যশোর অঞ্চল হইতে খুলনার কৃষকগণ বর্ষার প্রাক্কালে হালে চষিবার জন্ত বলদ কিনিয়া লইয়া যায় ; কিন্তু লবণাক্ত ও কর্দমময় দেশে, অনভ্যস্ত খাদ্যের জন্ত উহার প্রায়ই বর্ষান্তে মরিয়া যায়। অনেকে এরূপ ঠকিবে জানিয়াও গরু কিনে, কারণ তাহা না হইলে জমি পতিত থাকে। সুন্দরবনের আবাদের জন্য এইভাবে অনেক গো-হত্যা হয়। ভৈরবের দক্ষিণে বলদ বা গাভী উভয়ই খারাপ । যশোরের গাভীতে দুগ্ধ অধিক হয়, তাহাদের শরীর ভাল ও দীর্ঘজীবী হয়। সঙ্গতিসম্পন্ন ও উদ্যোগি-লোকে এক্ষণে বৈদেশিক গাভী ও বলদ আনিয়া পুষিতে আরম্ভ করিয়াছেন। সাধারণতঃ এক্ষণে আর গরু পুষিবার আদর নাই। গোষ্ঠ নাই। বলদের দোষে গরুকুল নিৰ্ম্মল হইতে বসিয়াছে। পূৰ্ব্বে শ্রান্ধের বৃষোৎ সর্গের পর ঘড়ি ছাড়িয়া দিত, উহারা অত্যাচার করিলেও লোকে কিছু বলিত না, কারণ তাহার একভাবে দেশের উপকার করিত ; লোকে দধি দুগ্ধ স্কৃতের লোভে সে উপকার বুঝিত। বনে জঙ্গলে শিয়াল, খাটাস, বনবিড়াল, গ’লে এবং মাঝে মাঝে কেঁদো ও নেকড়ে বাঘ দেখা যায়। পুরাতন জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে বন্ত শূকরের অত্যন্ত প্রাচুর্ভাব। খরগস ও সজারু অলক্ষিত ভাবে ফসলের ক্ষতি করে। রাঢ় বা পশ্চিম বঙ্গের মত হনুমান বা সুন্দরবনের মত বানরের উৎপাত এ অঞ্চলে নাই। যশোরের ইই এক স্থান ব্যতীত এ প্রদেশের সর্বত্র কাঠবিড়ালীর হাতে নিস্তার পাইয়াছে?