পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র

অ-ভক্তিমত্তা, নীচের প্রতি অ-দয়াদাক্ষিণ্য প্রভৃতি ঠাউরেছেন কেন? তার উত্তরে তিনি যা বলেন তার ভাবটা হচ্ছে এই যে, পাছে পাঠকেরা তাই ঠাউরে থাকেন এই কারণ-বশতঃ, আর কিছু নয়! কিন্তু আমার অপরাধ? ‘লেখক বিলাতি বিবিদের চাল-চোলধরণ-ধারণের আনুষঙ্গিক-রূপে স্ত্রীস্বাধীনতার প্রসঙ্গ উত্থাপন করিয়াছেন, এজন্য বিলাতানভিজ্ঞ অধিকাংশ লোকের মনে এইরূপ একটা কুসংস্কার জন্মিতে পারে যে কার্যতঃ স্ত্রীস্বাধীনতা আর কিছু নহে, কেবল বিবিদিগের চাল-চোল-ধরণ-ধারণ ইত্যাদি। ইহা একটি লোকবিখ্যাত বিষয় যে, বিবিদের shoppingএর জ্বালায়, নির্দোষ (?) আমোদাসক্তির জ্বালায়, তাহাদের স্বামীরা ধনে প্রাণে মারা যায়, অথচ স্ত্রীস্বাধীনতার একটু কোথাও পাছে আঁচড় লাগে এই ভয়ে তাঁহারা সকল অত্যাচার ঘাড় পাতিয়া লন— সকল বিষ হজম করিয়া ফেলেন।’ ইত্যাদি। এর থেকে অনেক কথা উঠতে পারে। প্রথমতঃ সম্পাদক-মহাশয় তা হলে এই কথা বলেন যে, বিবিদের চাল-চোল-ধরণে অবিনয়, অসরলতা, বেহায়ামো, উচ্চের প্রতি অ-ভক্তিমত্তা, নীচের প্রতি অ-দয়াদাক্ষিণ্য প্রকাশ পায়; দ্বিতীয়তঃ, যেন আমি বিবিদের অবিনয় অসরলতা বেহায়ামো প্রভৃতির আনুষঙ্গিক স্বরূপেই স্ত্রীস্বাধীনতা উল্লেখ করেছিলুম। সম্পাদক-মহাশয় যে কেন বলেন, বিবিরা অবিনয়ী, অসরল, উচ্চের প্রতি তাদের ভক্তি নেই, নীচের প্রতি দয়াদাক্ষিণ্য নেই—তা সম্পাদক-মহাশয়ই জানেন। একমাত্র shoppingএর উদাহরণ দিয়ে তিনি ইংরেজ-মহিলাদের স্কন্ধে অতগুলো পাপের বোঝা চাপিয়েছেন। আমি ইংলন্‌ডে যতই বেশি দিন থেকেছি ততই সেখানকার ইংরেজ-পরিবারের মধ্যে ভালো করে মিশেছি, আমি যতদূর জানি তাতে এ কথা আমি মুক্তকণ্ঠে বলতে পারি (অনেক

১৭০