দেখছেন strawberryর চেয়ে অসংখ্য দিশি ফল তাঁদের ভালো লাগে। আগে Devonshireএর ক্ষীর তাঁদের এত ভালো লাগত যে তার আর কথা নেই। কিন্তু কী আশ্চর্য! এখন দেখছেন আমাদের দেশের ক্ষীর তার চেয়ে ঢের ভালো লাগে। প্রথম বারে বিলেতের মুখ যে রকম দেখাচ্ছিল, এবারে ঠিক সে রকম দেখাচ্ছে না। কী আশ্চর্য পরিবর্তন! কিন্তু এর ভিতরে আমি তত আশ্চর্য কিছু দেখছি নে। এ রকম হবার কতকগুলি কারণ আছে। প্রধান কারণ হচ্ছে, বিলেত থেকে গিয়ে বিলেত-ফেরতেরা সম্পূর্ণ বিলিতি চালে চলেন। তাঁদের গৃহসজ্জা বিলিতি রকমের, বিলিতি বস্ত্র -পরিধান, দগ্ধ গোষ্পদ -সেবন, তাঁদের স্ত্রী-পরিবারদের ইংরিজি ভাবের আচার ব্যবহার; সুতরাং বিলেতের বাহ্য চাকচিক্য চোখে সয়ে গেলে এখেনে আর তেমন কিছু জিনিস থাকে না যা দেখে তাঁদের ধাঁধা লেগে যায়। তা ছাড়া তাঁরা ভারতবর্ষে গিয়ে স্ত্রী পুত্র পরিবার নিয়ে সংসারী হয়ে পড়েন, রোজগার করতে আরম্ভ করেন, ভারতবর্ষের মাটিতে তাঁদের শিকড় এক রকম বসে যায়। ভারতবর্ষীয়দের একটু বয়স হলেই তাঁদের মন কেমন শিথিল হয়ে যায়, তখন তাঁরা পায়ের ওপর পা দিয়ে টানাপাখার বাতাস খেয়ে কোনো প্রকারে দিন কাটিয়ে দিতে পারলে নিশ্চিন্ত থাকেন। বিলেতে আমোদ ও বিলাস ভোগ করতে গেলেও অনেক উদ্যমের আবশ্যক করে। এখানে এ ঘর থেকে ও ঘরে যেতে হলে গাড়ি চলে না, হাত পা নাড়তে-চাড়তে দশটা চাকরের ওপর নির্ভর করলে চলে না। কেনন। এখানে গাড়িভাড়া অত্যন্ত বেশি, আর চাকরের মাইনে মাসে সাড়ে তিন টাকা নয়। এখানে একটা থিয়েটার দেখতে যাও—সন্ধ্যে বেলা বৃষ্টি পড়ছে, পথে কাদা, একটা ছাতা ঘাড়ে করে মাইল কতক ছুটোছুটি করে তবে ঠিক
পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৮
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র
৮২
