পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, এ-যুগের বালক ও যুবকদের কথা ছেড়ে দি, প্রৌঢ়রাও তা উপলব্ধি করতে পারবেন না। ও ঘটনাটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় পলাসীর যুদ্ধের প্রতিশোধের মত। কলকাতার পথে পথে সেদিন যে সব স্মরণীয় দৃশ্য দেখেছি, তা দেখতে পাই নি ভারতের প্রথম স্বাধীনতাদিবসেও।

 অতি-বৃদ্ধ গিরিশচন্দ্র ঘোষ, দেহ তাঁর রোগে পঙ্গু। তিনি কারবার করেন সাহিত্য ও শিল্প নিয়ে, খেলার মাঠে কোনদিন পদার্পণ করেছেন ব’লে শুনি নি। এই অভাবিত সংবাদ শুনে উচ্ছ্বসিত ভাষায় ব’লে উঠলেন, ‘বাঃ! আমাদের আজ বড় আনন্দের দিন! বাংলাদেশের ছেলেদের উপর কিছু ভরসা হচ্ছে। এও যে দেখব তা ভাবি নি।·····মনে ক’রে দেখ দেখি যে লাল মুখ দেখলে আমরা ভয়ে আঁৎকে উঠি, বরাবর মনে ক’রে থাকি আমরা চেষ্টা করলে তাদের চেয়ে intellectually বড় হ’লেও হ’তে পারি, কিন্তু বাহুবলে তাদের কাছে কস্মিনকালে এগুতে পারব না—শিখ গোরখা কেবল তাদের কাছে যেতে পারে—সেই জাতের মিলিটারী দলকে খেলায় পরাজিত করা কম কাজ নাকি? একটা ভয়— একটা সঙ্কোচ— যেটা শুধু মনগড়া ছায়া— সেটা দূর হয়েছে। এখন আমরা মনে করতে পারি যে বাহুবলে আমরা তাদের সামনে এগিয়ে যেতে পারি— প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে চেষ্টা করলে তাদের পরাজয় করতে পারি। বাঃ খুব বাহাদুর! বাংলাদেশকে এই খেলায় জিতে দশ বছর এগিয়ে দিয়েছে।’

 সেই বিখ্যাত খেলায় নেমেছিলেন মোহনবাগানের এগারোজন খেলোয়াড় এবং প্রত্যেকেরই ক্রীড়ানৈপুণ্য হয়েছিল চমৎকার। কিন্তু তাঁদের ভিতরে শিবদাস বিরাজ করেছিলেন মধ্যমণির মত।

১৫০