পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

খেলা তেমন খুলত না। দাদার সঙ্গে তাঁর ঠিক মনের মিল ছিল ব’লেই তাঁরা দুজনেই বুঝতেন দুজনের খেলার ধরন ও কৌশল। সামনে বাধা পেলেই দুই ভাই এমন কায়দায় পরস্পরের সঙ্গে বল বিনিময় করতেন যে, প্রতিপক্ষরা দেখত দুই চক্ষে অন্ধকার! বিজয়দাসও একজন সুচতুর ভালো খেলোয়াড় ছিলেন।

 ১৯১৮ খৃষ্টাব্দের “শীল্ড-ফাইনালে”র ছবি আজও চোখের সামনে ভাসছে। কিন্তু কি অবিশ্বাস্য কষ্ট স্বীকার ক’রেই যে সে খেলা দেখতে হয়েছে! জানতুম মোহনবাগানের নামেই মাঠে জনতার সৃষ্টি হয় এবং “শীল্ডে”র চরম খেলায় সেই জনতা যে বহুগুণ বেড়ে উঠবে, এটাও আমার অজানা ছিল না। বেশ সকাল সকালই মাঠে গিয়ে হাজির হলুম। কিন্তু দেখলুম এক কল্পনাতীত, অসম্ভব দৃশ্য! সমস্ত গড়ের মাঠটা পরিণত হয়েছে জনতাসাগরে, তেমন বিপুল জনতা জীবনে আর কখনো চোখে দেখি নি। খেলার মাঠের দিকেও অগ্রসর হবার কোন উপায়ই নেই। তখন তো গ্যালারি ছিল না, লোকে খেলা দেখত ভাড়া দিয়ে ছয়ফুট থেকে বারো-চৌদ্দ ফুট উঁচু মাচানের উপরে চ’ড়ে। নিতান্ত পল্‌কা! বিপদজনক মাচান, প্রায়ই মানুষের ভার সইতে না পেরে হুড়মুড় ক’রে ভেঙে পড়ত— কারুর মাথা ফাটত, কারুর হাত-পা ভাঙত। কিন্তু সে সব মাচানেও আর তিলধারণের ঠাঁই নেই, দ্বিগুণ ভাড়ার লোভ দেখিয়েও একটুখানি পা রাখবার জায়গা সংগ্রহ করতে পারলুম না।

 ইডেন গার্ডেনে ফিরে গিয়ে ম্লানমুখে জনকোলাহল শ্রবণ করছি, এমন সময়ে এক পরিচিত ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা, তিনি ঐ বাগানের রক্ষক। আমার দুঃখের কথা শুনে তিনি তখনি একখানা লম্বা মই আনিয়ে দিয়ে বললেন, ‘দক্ষিণ দিকের একটা দেবদারু

১৫৩