পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

মুখে। ইংরেজদের অসামরিক দলের মধ্যে তখন সমধিক প্রতাপ ছিল ক্যালকাটা ফুটবল ক্লাবের। তাকে যে নিম্নতর শ্রেণীভুক্ত কোন দেশীয় দল হারিয়ে দিতে পারে, এটা ছিল একেবারেই কল্পনার অতীত। কিন্তু মোহনবাগান সেই অসাধ্য-সাধনাই করলে। “মিণ্টো ফেটে”র (fete) এক প্রতিযোগিতায় তার কাছে হেরে গেল ক্যালকাটার দল। কিন্তু মোহনবাগানের দলে একজন বাইরের খেলোয়াড় আছে, এই অজুহাতে কর্তৃপক্ষ সে খেলাটি নাকচ ক’রে দেন।

 মোহনবাগানের এই সব বিজয়-যাত্রার অধিনায়ক রূপে অতুলনীয় খ্যাতি অর্জন করলেন শিবদাস ভাদুড়ী।

 সাধারণতঃ তিনি “লেফ্‌ট লাইনে” খেলতেন। একহারা ছিপছিপে দেহ, বিপুলবপু ইংরেজ প্রতিযোগীদের পাশে কি নগণ্যই দেখাত! কিন্তু বলের উপরে তাঁর যেমন অসামান্য দখল ছিল, তেমনি তাঁর গতিও ছিল অত্যন্ত দ্রুত। প্রতিযোগীদের অনায়াসেই এড়িয়ে একেবারে “কর্নারে”র কাছে গিয়ে তিনি “সেণ্টার” করতেন, নয় বলটিকে এক পদাঘাতে প্রেরণ করতেন “গোলপোষ্টে”র দিকে। “লাইন” থেকে তাঁর মত আর কোন খেলোয়াড়কে আজ পর্যন্ত এত বেশী গোল দিতে দেখি নি—অধিকাংশ খেলাতেই গোল দেবার কৃতিত্ব অর্জন করতেন তিনিই। হয় নিজে গোল দিয়েছেন, নয় সুগম ক’রে দিয়েছেন গোল দেবার পথ। তাঁর আর একটি অদ্ভুত অভ্যাস ছিল। বেগে ছুটতে ছুটতে এগিয়ে গিয়ে গোলের দিকে বল মেরেই তিনি প্রায়ই হতেন ভূতলশায়ী। হয়তো অতিরিক্ত দ্রুতগতির টাল তিনি সামলাতে পারতেন না।

 আর একটি ব্যাপার লক্ষ্য করেছি। “লেফ্‌ট ইনে” অর্থাৎ ঠিক পাশেই তাঁর দাদা বিজয়দাস ভাদুড়ী না থাকলে শিবদাসের

১৫২