পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

পারে নি। কিন্তু শিশিরকুমারের অব্যবহিত পরেই এলেন রাধিকানন্দ ও নরেশচন্দ্র এবং তারপরেই নির্মলেন্দু লাহিড়ী! এঁরা প্রত্যেকেই যখন জনসাধারণের প্রশস্তি লাভ করলেন, তখন ষ্টার থিয়েটারের কর্তৃপক্ষও আর উদাসীন হয়ে থাকতে পারলেন না, তাঁরাও সাদরে আহ্বান করলেন শ্রীতিনকড়ি চক্রবর্তী, শ্রীঅহীন্দ্র চৌধুরী ও স্বর্গীয় দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতিকে। এবং তারপরেই শিশিরকুমার আবার আর একদল নূতন শক্তিশালী অভিনেতা (বিশ্বনাথ ভাদুড়ী, যোগেশ চৌধুরী, ললিত লাহিড়ী, শৈলেন চৌধুরী, তুলসীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীমনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, শ্রীরবি রায় ও শ্রীজীবন গঙ্গোপাধ্যায় প্রভৃতি) নিয়ে আর একটি সম্প্রদায় গঠন করলেন, তখন পুরাতনের কোন গর্বই আর অবশিষ্ট রইল না, তার প্রধান দুর্গ মনোমোহন থিয়েটারের অস্তিত্ব পর্যন্ত লুপ্ত হয়ে গেল।

 আণ্টিগোনাসের পর নাদির সাহ, প্যালারাম ও কেলো প্রভৃতি ভূমিকায় দেখা দিয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই রাধিকানন্দ একজন চৌকস অভিনেতা ব’লে অত্যন্ত বিখ্যাত হয়ে উঠলেন। ভবিষ্যতের জন্যে তাঁর আসন হয়ে গেল নির্দিষ্ট। তিনি ছিলেন একজন পদস্থ সরকারি কর্মচারী, ছয় মাসের ছুটি নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। ক্রমে ছুটি এল ফুরিয়ে, কিন্তু তবু তাঁর ব্যস্ততা নেই। পাদপ্রদীপের মোহ তাঁকে এমনভাবে পেয়ে বসল যে, তিনি স্থির ক’রে ফেললেন, আপিসের চাকরি আর করবেন না। চাকরি ছাড়তে আমি তাঁকে মানা করেছিলুম, কিন্তু তিনি শোনেন নি। ফল ভালো হয় নি। যশস্বী হলেন যথেষ্ট বটে, কিন্তু অর্থাভাবে মাঝে মাঝে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছেন— বিশেষতঃ শেষজীবনে। আর্ট পাশ্চাত্য দেশে গিয়ে অর্থকর হয়, কিন্তু বাংলাদেশে

১৭৬