পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

করবার জন্যে “চন্দ্রগুপ্ত” নাটকের পুনরভিনয়ের আয়োজন করা হ’ল। চাণক্য ও আণ্টিগোনাসের ভূমিকায় যথাক্রমে নরেশচন্দ্র ও রাধিকানন্দ।

 আণ্টিগোনাসের ভূমিকাটি রাধিকানন্দ যে নিজের জন্যে কেন রেছে নিয়েছিলেন, প্রথমটা আমি তা আন্দাজ করতে পারি নি। ওটি হচ্ছে “চন্দ্রগুপ্তে”র একটি অবান্তর ভূমিকা, তখন পর্যন্ত তা বিশেষভাবে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নি। রাধিকানন্দ মহলাও দিতে লাগলেন নিতান্ত সাধারণ ভাবেই, তাঁর অভিনয়ে যে অসাধারণ কিছু পাব তাও আমি বুঝতে পারলুম না।

 কিন্তু তিনি মন্মথনাথ পালের (হাঁদুবাবু) চোখকে ফাঁকি দিতে পারেন নি। একদিন তিনি আমাকে ডেকে বললেন, ‘রাধিকাবাবু মহলার সময়ে নিজের কলকৌশল প্রকাশ করতে রাজি নন। কিন্তু দেখবেন, ওঁর অভিনয় খুব উৎরে যাবে।’

 সফল হ’ল তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী। প্রথম পুনরভিনয়ের রাত্রে পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগারে দর্শকরা ঘন ঘন করতালি দিয়ে পরম সমাদরে অভিনন্দিত করলে রাধিকানন্দের অভিনয়কে এবং তারপর থেকে আণ্টিগোনাসের সেই অবান্তর ভূমিকাটিই নাটকের মধ্যে হয়ে উঠল প্রধান ভূমিকার মত। কেবল আমিই অবাক হলুম না, মিনার্ভার কর্তৃপক্ষও রীতিমত বিস্মিত। তাঁর সংলাপ, দৈহিক ভঙ্গিমা, মৌখিক ভাবের ব্যঞ্জনা এবং প্রবেশ ও নিষ্ক্রমণ সমস্তই হ’ল এমন অভিনব যে দর্শকরা উপলব্ধি করলে অভাবিত আনন্দ। নাট্যগগনে যে একটি নূতন তারকার সন্ধান পাওয়া গেল, সে সম্বন্ধে আর কারুর কোন সন্দেহ রইল না।

 একক শিশিরকুমার পুরাতনকে ম্লান ক’রে দিয়েছিলেন বটে, তবে পুরাতনের প্রভাব থেকে আমাদের নাট্যজগৎ তখনো মুক্ত হ’তে

১৭৫