পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 শিল্পী-মন নানাদিক দিয়ে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করে—কখনো কাব্য বা সাহিত্য, কখনো সঙ্গীত, কখনো চিত্র এবং কখনো বা অন্যান্য চারুকলার ভিতর দিয়ে। এর সেরা নজীর হচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ। প্রধানত কবি রূপেই তিনি বিশ্ববিখ্যাত বটে, কিন্তু ললিতকলার কত দিকে ছড়িয়ে থাকত তাঁর রসগ্রাহী মন! কখনো তিনি গীতিকার, কখনো তিনি সুরকার, কখনো তিনি নট এবং কখনো বা চিত্রকর।

 কিন্তু এ দেখে অবাক হবার কারণ নেই। সব আর্টেরই গোড়ার কথা এক। তাই এক শ্রেণীর শিল্পী চেষ্টা করলেই অন্য শ্রেণীর শিল্পীর গুপ্তকথা হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন। যিনি তা পারেন না, তাঁর শিল্পবোধ অল্প। আর্টের কোন বিভাগেই তিনি উচ্চশ্রেণীতে উন্নীত হবার যোগ্য নন।

 শরৎচন্দ্রকে সবাই জানে ঔপন্যাসিকরূপে। কিন্তু তাঁর আরো কিছু কিছু পরিচয় আছে, জনসাধারণের কাছে যা অজ্ঞাত। কেবল লেখনী নয়, তুলিকা চালনাতেও তাঁর হাত ছিল না অপটু। আত্মজীবনীর এক জায়গায় নিজেই বলেছেন, সুদীর্ঘ আঠারো বৎসরকাল তিনি লেখনী ত্যাগ ক’রে বসেছিলেন। ‘সাহিত্যের সঙ্গে হ’লো আমার ছাড়াছাড়ি, ভুলেই গেলাম যে জীবনে একটা ছত্রও কোনোদিন লিখেছি।’

 কিন্তু তাঁর মত অসামান্য শিল্পীর চিত্ত আর্টকে একেবারে ভুলে রিক্ত হয়ে থাকতে পারে না। কলম ছাড়লেন বটে, কিন্তু তুলিকা

১৮৭