পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

সংলাপ করবার শক্তির অভাব হয়েছে। আগে রবীন্দ্রনাথ ও নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের কাছে গিয়ে চমৎকার সংলাপ শুনেছি। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরও এই শক্তির অধিকারী ছিলেন, কিন্তু ব্যাধি ও বার্ধক্য তাঁর কণ্ঠকে প্রায় বন্ধ ক’রে ফেলেছে। অমৃতলালও অপূর্ব সংলাপের দ্বারা যে কোন আসর একেবারে জমিয়ে তুলতে পারতেন।

 অমৃতলাল প্রথমে ছিলেন নট, তারপর হন নাট্যকার। গিরিশ্চন্দ্রের চেয়ে বয়সে ছোট হয়েও তাঁরও আগে তিনি করেছিলেন নাটক-রচনার জন্যে লেখনীধারণ। বাংলা নাট্যসাহিত্যে প্রহসনে অমৃতলালের জুড়ি কেউ আছেন ব’লে জানিনা। কিন্তু কেবল প্রহসন নয়, তিনি পাঁচ-পাঁচখানি নাটকও রচনা ক’রে গিয়েছেন। গিরিশচন্দ্র, অর্ধেন্দুশেখর ও অমৃতলাল মিত্রের সমকক্ষ না হ’লেও অভিনয়েও তাঁর শক্তি ছিল অসাধারণ। যদিও নিছক গম্ভীর রসে তাঁর দক্ষতা ততটা খুলত না, কিন্তু ‘সিরিয়ো-কমিক’ ভূমিকায় তিনি বিশেষ নিপুণতার পরিচয় দিতে পারতেন। নীলকমল (সরলা), বিহারী খুড়ো (তরুবালা) ও নিতাই (খাসদখল) প্রভৃতি ভূমিকায় তাঁর অভিনয় হ’ত অতুলনীয়। “প্রফুল্ল” নাটকের রমেশের ভূমিকাতেও তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। কবিতা রচনাতেও তাঁর হাতযশ ছিল এবং সেক্ষেত্রে তাঁর রচনাশক্তি আধুনিক না হলেও সুমিষ্ট ঘরোয়া শব্দ চয়ন ক’রে তিনি কবিতাগুলিকে উপভোগ্য ক’রে তুলতেন। গান রচনাতেও তাঁর বাহাদুরি ছিল যথেষ্ট এবং তাঁর কয়েকখানি গান অত্যন্ত বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। এই হ’ল তাঁর সংক্ষিপ্ত পরিচয়।

 ১৯১৯ খৃষ্টাব্দে আমার রচিত একখানি দুই অঙ্কের কৌতুকনাটিকা (প্রেমের প্রেমারা) মিনার্ভা থিয়েটারে অভিনয়ের জন্যে

৩৭