পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

নির্বাচিত হয়েছিল। অমৃতলাল তখন উক্ত রঙ্গালয়ের সঙ্গে কোনদিক দিয়ে সম্পর্কিত না হয়েও, পালাটি যেদিন পাঠ করা হয় সেদিন দৈবক্রমে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। নাটিকা খানি শুনে খুসি হয়ে তিনি তার মহলার ভার নিজের হাতেই গ্রহণ করতে চান, কোনরকম পারিশ্রমিক না নিয়েই। বলা বাহুল্য, “মিনার্ভার” কর্তৃপক্ষ সাগ্রহে সম্মত হয়েছিলেন তাঁর প্রস্তাবে। সেই সময়েই তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় স্থাপনের সুযোগ হয়।

 গিরিশ-যুগে মহলা দেবার পদ্ধতি সম্বন্ধে অনেক কথাই শ্রবণ করেছি, যদিও এ-বিষয়ে বিখ্যাত গিরিশ-অর্ধেন্দু কিভাবে মহলা দিতেন তা দেখবার সৌভাগ্য আমার হয় নি। গিরিশচন্দ্রকে ‘গুরুদেব’ ব’লে স্বীকার করতেন অমৃতলাল এবং গিরিশচন্দ্র যখন ষ্টার থিয়েটারে ছিলেন, তখন গিরিশচন্দ্রের নির্দেশে অনেক সময়ে তিনিই মহলার ভার গ্রহণ করতেন। সুতরাং গিরিশচন্দ্রের সমসাময়িক একজন বিখ্যাত নাট্যাচার্যের মহলা দেওয়ার পদ্ধতি দেখতে পাব ব’লে আমার মন উৎফুল্ল হয়ে উঠল।

 তখনকার কয়েকজন প্রসিদ্ধ নট-নটীই আমার নাটকে ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন— যেমন মন্মথনাথ পাল (হাঁদুবাবু), কার্তিকচন্দ্র দে, কুসুমকুমারী, চারুশীলা ও শ্রীমতী সুশীলাসুন্দরী প্রভৃতি। শেষোক্ত অভিনেত্রী ছাড়া আর সকলেই এখন স্বর্গত। প্রেক্ষাগারের প্রথম সারের আসনে ব’সে অমৃতলাল মহলা দেখতে লাগলেন এবং দেখতে দেখতে হাস্য-পরিহাসের সঙ্গে বলতে লাগলেন নাট্যশিল্প সম্বন্ধে জ্ঞানগর্ভ নানা কথা। নট-নটীদের প্রবেশ ও প্রস্থান হওয়া উচিত কি রকম, সংলাপের স্বাভাবিকতা ও অস্বাভাবিকতা, মৌলিক কথার সঙ্গে অঙ্গভঙ্গির সঙ্গতি প্রভৃতি নিয়ে এক-একবার

৩৮