পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

আমার দ্বারা সম্পাদিত “নাচঘরে” প্রকাশিত নাট্যকার অতুলকৃষ্ণ মিত্রের “আত্মজীবনী” পাঠ ক’রে জানতে পারি, “আলিবাবা” গীতিনাটকের পাণ্ডুলিপি নিয়ে ক্ষীরোদপ্রসাদ গিয়েছিলেন তাঁর কাছে এবং তিনিই নাকি পালাটির অধিকাংশ গান বেঁধে দেন ও বাকি কোন কোন গান গিরিশচন্দ্র প্রভৃতির রচনা। অতুলবাবুই “আলিবাবা”র অভিনয়ের ব্যবস্থা ক’রে দেন। “ক্লাসিক থিয়েটার” নব-প্রতিষ্ঠিত রঙ্গালয় হয়েও তখন দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছিল না এবং রঙ্গালয়ের সেই দুর্ভাগ্যই হ’ল ক্ষীরোদপ্রসাদের সৌভাগ্যের হেতু। সব দিক দিয়ে সার্থক হয়ে উঠল “আলিবাবা”র অভিনয়, মালিকের ঘরে আসতে লাগল কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। বিজ্ঞাপনে “আলিবাবা”কে বলা হ’ল—“ক্লাসিকের বিজয়বৈজয়ন্তী!”

 এই “আলিবাবা”ই হ’ল ক্ষীরোদপ্রসাদের পক্ষে রঙ্গালয়ের প্রবেশপত্রের মত। পরের বৎসরেই (১৮৯৮ খৃঃ) “রয়েল বেঙ্গল থিয়েটারে” অভিনীত হয়ে তাঁর “প্রমোদরঞ্জন” গীতি-নাটকও জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ঐখানে তাঁর “কুমারী” ও “বভ্রুবাহন” নাটকও পাদপ্রদীপের আলোক আসে। তার কিছুকাল পরেই তিনি প্রধান নাট্যকাররূপে ষ্টার থিয়েটারে যোগ দেন এবং ঐ সম্প্রদায়ের জন্যে একমাত্র “রঘুবীর” ছাড়া পর পর অশ্রান্তভাবে রচনা করেন “সপ্তম প্রতিমা”, “সাবিত্রী” “বেদৌরা”, “প্রতাপাদিত্য”, “বৃন্দাবন-বিলাস”, “রঞ্জাবতী” (১৯০৪ খৃঃ)। (এই সময়েই রঙ্গালয়ে দ্বিজেন্দ্রলালের আত্মপ্রকাশ), “নারায়ণী”, “পদ্মিনী”, “উলুপী” ও “পলাশীর প্রায়শ্চিত্ত” প্রভৃতি নাটক। রঙ্গালয়ে ক্ষীরোদপ্রসাদের জন্যে প্রতিষ্ঠিত হ’ল নির্দিষ্ট আসন।

 রঙ্গালয়ের নট-নাট্যকাররা সাধারণতঃ নিজেদের রচনায় বা

৫১