পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

অবশ্য শিস্-দেনেওয়ালা নন, উচ্চতর শ্রেণীর শিল্পী। পিয়ানো বাজিয়ে তিনি কেবল য়ুরোপ-আমেরিকায় দিগ্বিজয় করেন নি, অমরত্ব অর্জন করেছেন। সঙ্গীতবিদ্‌রূপে অতিশয় জনপ্রিয় হ’তে পেরেছিলেন ব’লেই প্রথম মহাযুদ্ধের পর তিনি পোল্যাণ্ডের প্রধান মন্ত্রীর পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। অর্থের দিক দিয়েও তাঁকে ধনকুবের বলা চলত।

 ঐ দুটি লোকের নাম করলুম কেন, এই সেই কথাই বলি। পিয়ানো হচ্ছে পাশ্চাত্য দেশের একটি বিখ্যাত বাদ্যযন্ত্র। সুতরাং পিয়ানোর সুপটু বাদক যে যশস্বী হবেন, এজন্যে বিস্মিত হবার কারণ নেই; কিন্তু শিস্ তো অকিঞ্চিৎকর ব্যাপার। তাকে আর্ট ব’লে মানা দূরের কথা, আমরা তাকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনি না, তবু ওর মধ্যেও কেউ কেরামতি দেখাতে পারলে পাশ্চাত্য রসিকদের গুণগ্রাহিতার ফলে তিনি রীতিমত বিত্তশালী হয়ে উঠতে পারেন। এক্ষেত্রে এইটেই হচ্ছে দ্রষ্টব্য।

 ক্যারুসো, শালিয়াপিন, মেল্‌বা ও প্যাটি প্রভৃতি ওদেশের গায়ক-গায়িকারা যত লক্ষ টাকা রোজগার করেছেন, তা শুনলে আমাদের রাজা-মহারাজাদেরও মাথা ঘুরে যাবে। কিন্তু ওঁদের কথা ছেড়ে দি, কারণ ওরা তো হচ্ছেন বিশ্বের বাজারে বড় বড় রুইকাত্‌লা। আমেরিকায় মেরিয়ান অ্যাণ্ডার্সন নামে একটি মেয়ে আছেন। তাও শ্বেতাঙ্গদের নয়, কাফ্রিদের মেয়ে— যারা হচ্ছে ইয়াঙ্কি মুল্লুকের হরিজন। মেরিয়ানের গানের গলা অসাধারণ, তবু শ্বেতাঙ্গদের অনেকেই তাকে দমিয়ে রাখবার চেষ্টা করে। একবার ঘোষণা করা হ’ল, ওয়াশিংটন সহরে ‘ইষ্টারে’র দিন মেরিয়ানের গানের আসর বসবে। কিন্তু কোথায় বসবে আসর, কোন রঙ্গালয়ই মেরিয়ানকে ঠাঁই দিতে রাজি হ’ল না। তার ম্যানেজার তখন

৫৮