পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আট

 সাহিত্যে, শিল্পে, সঙ্গীতে— এমন কি অভিনয়েও জোড়াসাঁকোর ঠাকুর-পরিবারের দান অতুলনীয়। রবীন্দ্রনাথ জন্মগ্রহণ না করলেও বাংলার সংস্কৃতির ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকত ঠাকুর-পরিবারের বিস্ময়কর অবদান। ঊনবিংশ শতাব্দীর উত্তরার্ধে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া ওখানে আরো যে কয়জন কৃতী মানুষ দেখা দিয়েছেন, তাঁরা হচ্ছেন দ্বিজেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, বলেন্দ্রনাথ, সুধীন্দ্রনাথ, দিনেন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ ও স্বর্ণকুমারী। বাংলা দেশের যে কোন পরিবার এতগুলি শক্তিধরকে লাভ করতে পারলে চিরস্মরণীয় হ’তে পারত।

 ১৩৪৪ সালের শেষের দিকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরেই গগনেন্দ্রনাথ ইহলোক ত্যাগ করেন। শরৎচন্দ্রের মৃত্যুর পর দেশব্যাপী সাড়া পড়ে গিয়েছিল এবং ছোট বড় প্রত্যেক পত্রিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁর সাহিত্যসাধনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা। কিন্তু শিল্পী গগনেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর কোন সাময়িক পত্রিকাতেই তাঁর আর্ট নিয়ে বিশিষ্ট আলোচনা আমার দৃষ্টিগোচর হয় নি। এর কারণ কি বাঙালী লেখক ও পত্রিকাওয়ালাদের চিত্রকলা সম্বন্ধে অপরিসীম অজ্ঞতা? না চিত্রকলার প্রতি অবহেলা? অথচ সূক্ষ্মবিচারে প্রমাণিত হবে, সাহিত্যে ও চিত্রকলায় যথাক্রমে শরৎচন্দ্রের ও গগনেন্দ্রনাথের প্রতিভা হচ্ছে তুল্যমূল্য।

 গগনেন্দ্রনাথ ছিলেন তুলি-কলমের ঐন্দ্রজালিক অবনীন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠ সহোদর। কনিষ্ঠের মত তাঁরও প্রাচ্য চিত্রকলা-পদ্ধতির উপর

৬৫