পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দশ

 যাঁদের দেখেছি, লিখতে বসেছি তাঁদের কথা। আমার স্মৃতির জগতে আজ স্বর্গীয় মানুষদের জনতা। তাঁদের সকলকার কথা বলতে গেলে কথা আর ফুরুবে না এবং সকলকার কথা বলবার মত নয়ও। সাহিত্য ও আর্টের ক্ষেত্রে যে সব অসামান্য মানুষ আমার মনের পটে বিশেষ রেখাপাত করেছেন, আমি দেখাতে চাই কেবল তাঁদেরই কয়েকজনকে।

 অর্ধেন্দুশেখর ছিলেন এমনি একজন অসামান্য মানুষ। গত যুগের প্রথম শ্রেণীর নাট্যশিল্পীদের মধ্যে তাঁকে আমি যতবার দেখবার সুযোগ পেয়েছি, ততবার আর কারুকেই নয়। তাঁর সঙ্গে কখনো আমার মৌখিক আলাপ হয় নি, অথচ তিনি ছিলেন আমার শৈশবের বন্ধু! আমার বয়স যখন পাঁচ কি ছয় বৎসর, তখন প্রেক্ষাগারের ত্রিতলে তারের জাল দিয়ে ঘেরা মেয়েদের আসনে মায়ের সঙ্গে ব’সে দেখেছি, গুরুমশাইয়ের ভূমিকায় অর্ধেন্দুশেখর বেত্র আস্ফালন করতে করতে পাঠশালার ছেলেদের বলছেন,—‘পড়্, পড়্, ল্যাখে ল্যাখে পড়্!’ সে ছবি আজও আমার মনে ঝাপ্‌সা হয় নি। অভিনেতার যথার্থ পরিচয় দিতে গেলে চাক্ষুষ পরিচয়ের মূল্যই হচ্ছে সব চেয়ে বেশী। রঙ্গমঞ্চের বাইরে থাকে নটের যে ব্যক্তিগত জীবন, তার কথা এখানে ধর্তব্যের মধ্যেই গণ্য নয়।

 সেকালের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ব’লে অতুলনীয় নাম কিনেছিলেন গিরিশ্চন্দ্র ও অর্ধেন্দুশেখর এবং বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত অভিনেতাই

৮০