পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এগারো

 নাটোরের মহারাজা এবং প্রাতঃস্মরণীয়া অর্ধবঙ্গের অধীশ্বরী রাণী ভবানীর ও পরম সাধক রাজর্ষি রামকৃষ্ণের বংশধর ব’লেই জগদিন্দ্রনাথের নাম এতটা বিখ্যাত হয়ে ওঠে নি। তাঁর আগে আরো অনেকেই নাটোরের মহারাজা উপাধি লাভ করেছেন। কিন্তু লোকে তাঁদের নাম মনে রাখে নি। জগদিন্দ্রনাথ স্বহস্তেই রচনা করেছেন নিজের খ্যাতির সোপান। “সেই ধন্য নরকুলে, লোকে যারে নাহি ভুলে”— তা তিনি রাজাই হোন, আর প্রজাই হোন। কেবল বংশমর্যাদা বা উপাধি কারুকেই যশস্বী করতে পারে না।

 জগদিন্দ্রনাথকে আমি প্রথম দেখি ইডেন গার্ডেনের খেলার মাঠে, ক্রিকেট-খেলোয়াড়রূপে। সে সময়ে তিনি ভারতের নানা প্রদেশ থেকে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলোয়াড়দের আনিয়ে বিপুল ব্যয়ে গঠন করেছিলেন প্রসিদ্ধ নাটোরের দল। কুচবিহারের মহারাজা স্যর নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভূপ বাহাদুরও তখন আর একটি স্মরণীয় দল গড়েছিলেন; তিনি বিলাত ও অষ্ট্রেলিয়া থেকেও আনাতেন নামজাদা খেলোয়াড়দের। কিন্তু নাটোরের দলের গৌরব বেশী, কারণ তা গঠিত হয়েছিল ভারতীয়দের নিয়েই। এই দুই মহারাজার দল কলকাতার ক্রিকেট খেলার আদর্শকে যতটা ঊর্ধ্বে স্থাপন করেছিল, আজ পর্যন্ত আর কোন দল তা পারে নি। জগদিন্দ্রনাথের নাটোরের দলের অবদান নিয়েই একটি বৃহৎ ও চিত্তাকর্ষক ইতিহাস রচনা করা যায়, কিন্তু আমাদের সে স্থান নেই।

৮৮