পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

や যাত্রাবদল কিন্তু সে-বার চৈত্রমাসের আগেই দেশে ফিরলুম, ভঙুলমামার সঙ্গে দেখার যোগাযোগ হয়ে উঠল না । বছর তিনেক পরে । দোলের সময় । মামার বাড়ির দোলের মেলা খুব বিখ্যাত, নানা জায়গা থেকে দোকানপসাবের আমদানি হয়। আমি মায়ের কাছে আবদার সুরু করলুম, এবার আমি একা রেলে চড়ে মেলা দেখতে যাব মামার বাড়ি । আমায় এক ছেড়ে দিতে বাবার ভয়ানক আপত্তি, অবশেষে অনেক কান্নাকাটির পর তঁাকে রাজি করানো গেল । সারাপথ সে কি আনন্দ ! একা টিকিট ক’রে, রেলে চড়ে, মামার বাড়ি চলেছি। জীবনে এই সর্বপ্রথম এক বাড়ির বার হয়েচি সেই আনন্দেই সারাপথ আত্মহারা ! কিন্তু এ সুখ সাইল না । মামাব বাড়ির ষ্টেশনে নেমেই কি রকমে হেঁচটা খেয়ে প্লাটফৰ্ম্মের কঁাকরের উপর পড়ে গিয়ে আমার হাটু ক্ষত-বিক্ষত হযে গেল । অতি কষ্ট্রে মামার বাড়ি পৌছে বিছানা নিলুম। পরদিন সকালে উঠতে গিয়ে দেখি আর উঠতে পারিনে-দুই হাটুই বেজায় টাটিযেচে, সঙ্গে সঙ্গে জ্বর। কোথা দিয়ে দোল কেটে গেল টেরও পেলুম না। দিদিমাকে অনুরোধ করলুম, বাড়িতে যেন তঁরা চিঠি না লেখেন যে আমি আসবার সময় ষ্টেশনে পড়ে গিয়ে হঁটুি কেটে ফেলেছি। সেরে উঠে বেড়াতে বেরিয়ে একদিন দেখি ভঙুলমামার বাড়িটা অনেক দূর গাথা হয়ে গেছে। কাঠ-থামাল পৰ্য্যন্ত গাথা হয়েছে, কিন্তু কড়ি এখনও বসানো छ्शन् ि। হঠাৎ এত খুশী হয়ে উঠলুম যে আছাড় খেয়ে হাঁটু কাটার কথা টের পেলে বাবা কি বলবেন, তখনকার মত সে দুশ্চিন্তা মন থেকে মুছে গেল। উৎসাহে ও কৌতুহলে এক দৌড়ে ভঙুলমামার বাড়িতে গিয়ে হাজির। গাঁথুনি অনেক দিন বন্ধ আছে মনে হ’ল, গত বর্ষার পরে বোধ হয়। আর মিস্ত্রি আসে নি। ঘরের