পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভঙুলমামার বাড়ী ܘܶ আমি কোন কলেজে পড়ি, কোন মেসে থাকি, কবে আমার পরীক্ষা ইত্যাদি নানা প্রশ্নে আমায় জ্বালাতন ক’বে তুললেন। আজকাল তিনি কলকাতায় চাকরি করেন। বাগবাজারে বাসা, তার বড়ছেলেও এবার ম্যাটিক দিয়ে ফাষ্ট ইয়ারে পড়ছে-এ- সব খবর ও দিলেন । আমি জিগ্যেস করলুম,--আপনাদের এখানকার বাড়িতে ছেলেমেয়ে আনবেন না ? ভঙুলমামা বললেন, আনবি, শিগগীরই আনিব বাবা। এখনও একটু বাকী আছে, একটা রান্নাঘর আর একটা কৃয়ে-এ দুটো করতে পারলেই সব এনে ফেলি। কলকাতায় বাসা ভাড়া আর দুধের খরচ যোগাতেই• • • সেইজন্যেই তো খেয়ে না-খেয়ে দেশে বাড়িটা করলুম, তবে ঐ একটুখানি যা বাকী আছে, -- তা ছাড়া চিলেকোঠার ছাদটা এখনও • • • এইবারেই ভাবছি শ্রাবণ মাসের দিকে ওটাও শেষ করব । বলে কি ! এখনও বাকী ! জ্ঞান হয়ে পৰ্য্যন্ত দেখে আসছি। ভঙুলমামার বাড়ি উঠেছে ! এ তাজমহল নিৰ্ম্মাণের শেষ বেঁচে থেকে দেখে যেতে পারব তো ! ভঙুলমামা আপন মনেই ব’লে যেতে লাগলেন--সামান্য চাকরি, ছা-পোষা মানুষ বাবা, কাচ্চাব্বাচ্চ খাইযে যা থাকে তাতেই তো বাড়ি হবে ? এখন ত বাসায় বাসায় কাটাচে, আজ যদি চাকরি যায়। তবে, ছেলেপুলে নিয়ে কোথায় দাডিাব, তাই ভেবে আজ চোদ-পনেরো বছর ধ’রে একটু একটু ক’রে বাড়িটা তুলচি । তাই এইবার আর দেরি হবে না, আসছে বছর সব এনে ফেলব। জায়গাটা বড় ভালবাসি । ভঙুলমামা বললেন ত চোদ-পনেরো বছর, কিন্তু আমার মনে হ’ল ভঙুলমামার, বাড়ি উঠছে আজ থেকে নয়, জীবনের পিছন ফিরে চেয়ে দেখলে যতদূর দৃষ্টি, চলে ততকাল ধ’রে- যেন অনন্তকাল, অনন্ত যুগ ধ’রে ভঙুলমামার বাড়ির ইট এক