পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উইলের খেয়াল 8) খেলেন, ব্যাগ খুলে ওষুধ খেলেন তিন-চার রকম, কোনটা কবিরাজী, কোনটা বিলিতি পেটেণ্ট ওষুধ । দু-প্যাকেট সিগারেট শেষ করলেন। দেখলাম পূৰ্ণবাবু চিরবঞ্চিত জীবনের সর্বগ্রাসী তৃষ্ণায় ভোগলালসা মেটাতে উদ্যত হয়েচেন বিকারের রোগীর মত। চারি ধারে ঘনায়মান মৃত্যুর ছায়ার মধ্যে, স্বল্পতৈল জীবনদীপের আলো যত সংকীর্ণ থেকে সংকীর্ণতর জ্যোতিঃবৃত্তের সৃষ্টি করচে উনি ততই উন্মাদ আগ্রহে যেখানে যা পাবার আছে পেতে চান- যা নেবার আছে নিতে চান। জীবনে ওঁর যখন সুবৃষ্টি এল, জল না পেয়ে তখন আধ-মরা, সেই এল-কিন্তু এত দেরি করে ফেললে ! 来源 来源 来 আমায় বললেন-একটু কিছু বাড়াবাড়ি খেলেই, ওষুধ খেয়ে রাখি। আর হজম করতে পারিনে এখন। আমাদের পাড়ায় আছে গদাধর কবরেজ-খুব ভাল চিকিচ্ছে করে, একহাপ্তার ওষুধ নেয় দু-টাকা-তারই কাছে ভাবছি। এবার-পূর্ণবাবুর সেই নিমপাতা-বাটা মেখে ভাত খাওয়ার কথা আমার মনে পড়ল, আরও মনে পড়ল পূৰ্ণবাবুর প্রথম জীবনের সৌখীনতার কথা। এখন তিনি বুঝেছেন আর বেশী দিন বঁাচবেন না, চিরবাঞ্চিত জীবনের সর্বগ্রাসী তৃষ্ণায় ভোগলালসা তার বিকারের রোগীর মত অসংযত, অবুঝ । শান্তিরামকে গল্পটা বলব ভেবেছিলাম, কিন্তু সে দিব্যি নাক ডাকিয়ে ঘুমুচ্চে।