পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কনে দেখা 8S এরিকা পাম গাছ বাচলি কি মোলো-অত তদারক করবার তার গরজ নেই । কিন্তু শেষে বাধ্য হ’য়ে কলকাতা ছাড়তে হোল হিমাংশুকে । অনেকদিন পরে সে আবার এল। কলকাতায় । নীলামওয়ালার দোকানে বিকেলে গেল। গাছ - দেখতে। গাছটা নেই, বিক্রী হয়ে গিয়েচে সাড়ে সাত টাকায়। কমিশন বাদ দিয়ে হিমাংশুর বিশেষ কিছু রৈল না। কিন্তু টাকার জন্যে ওর তত দুঃখখনেই, এত দিন পরে সত্যি সত্যিই গাছটা পরের হয়ে গেল । তার প্রবল আগ্ৰহ হোল গাছটা সে দেখে আসে । নীলামওয়ালা সাহেব প্ৰথমে ঠিকানা দিতে রাজী নয়, নানা আপত্তি তুললে-বহু কষ্ট্রে তাকে বুঝিয়ে ঠিকানা যোগাড় করলে । সাকুলার রোডের এক সাহেবের বাড়ীতে গাছটা বিক্ৰী হয়েচে, হিমাংশু পরদিন সকালে সেখানে গেল । সাকুলার রোডের ধারেই বাড়ী, ছোট গোটুওয়াল কম্পাউণ্ড উঠোনের একধারে একটা বাতাবী নেবু। গাছ, গেটের কাছে একটা চারা পাকুড় গাছ। সাহেবের গাছপালার সখ আছে-পাম অনেক রকম রেখেছে, তার মধ্যে ওর পামটাই সকলের বড়। হিমাংশু বলে, সে হাজারটা পামের মধ্যে নিজেরটা চিনে নিতে পারে । কম্পাউণ্ডে ঢুকবার দরকার হোল না, রাস্তার ফুটপাথ থেকেই বেশ দেখা যায়, বারান্দায় উঠবার পৈঠার ধারেই তার পিপে কাটা টবশুদ্ধ পামগাছটা বসানো রয়েচে । গাছের চেহারা ভালো-তবে তার কাছে থাকবার সময় আরও বেশী সতেজ, সবুজ ছিল । হিমাংশুর মনে পড়ােল এই গাছটার কবে কোন ডাল গজালো-তার খাতায় নোট করা থাকতো। ও বলতে পারে প্রত্যেকটী ডালের জন্মকাহিনী-একদিন তাই ওর মনে ভারী কষ্ট হোল, সেদিন দেখলে সাহেবের মালী নীচের দিকের ডালগুলো সব কেটে দিয়েচে । মালীকে ডাকিয়ে বল্পে-ডালগুলো ওরকম কেটেচ কেন ? মালীটা ভাল মানুষ । বল্লে-আমি কাটিনি বাবু, সাহেব বলে দিল 8