পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b'8 যাত্ৰাৰ দল ফৰ্ম্মে হঠাৎ দেখি অতি মলিন এক কাচা গলায় বন্দিনাথ। ব্যাপার কি ? সেজ মামা ও মামীম দিব্য সুস্থ দেহে বৰ্ত্তমান আছেন, গত শনিবারেও দেখা করিয়া আসিলাম, তবে বন্দিনাথের গলায় কাচা কিসের? ব্যাপারটা ভাল করিয়া বুঝিবার পূর্বেই বন্দিনাথ আমার গাড়ীর দরজাতে আসিয়া পৌছিল এবং ইনাইয়া বিনাইয়া যাত্রীদের কাছে বলিতে লাগিল যে, সম্প্রতি তার মাতৃ-বিয়োগ হইয়াছে, তাহার আর কেহ নাই, কি করিয়া মাতৃদায় হইতে উদ্ধার হইবে ভাবিয়া ভাবিয়া রাত্রে ঘুম হয় না, অতএব-ইত্যাদি । আমি দেখিলাম, আমার কামরায় আসিল বলিয়া, অন্যদিকে মুখ ফিরাইয়া তাড়াতাড়ি সে কামরা হইতে নামিযা অন্য একখানা গাড়ীতে গিয উঠিলাম । কি বিপদ । কি বিপদ ! এমন বিপদেও মানুষে পড়ে ! একদিন বড় মামার বাসায় গিয়া গল্পটা করিলাম। বড় মামা বলিলেন-ওর কথা আর বোলো না । মধ্যে কি মাসটা এখানে তো এল । তোমাব মামীম। বল্লেন, বোদে তুই তো এলি-তোর পকেটে তো একটা পযসা ও নেই দেখছি।-- আমার কিন্তু ভয় হচ্ছে রে । বোদে বল্লে, আমারও ভযা হচ্ছে জ্যাঠাইমা, টুনুর গলার হার, ছোট খুকীর বালা সামলে রাখে। তোমার মামীম তথা খুনি তাদের হাব বালা সব খুলে ট্রাঙ্কের মধ্যে পুরলে। খুব সকালে বন্দিনাথ চলে গেল। আমি তখনও মশারীর মধ্যে শুয়ে। একটু বেলা হোলে দেখি, আমাব বাধানে হুকোটা ঘরের কোণে নেই। খোজ খোজ আর খোজ ! --কার কীত্তি বুঝতে বাকী রইল না । সেই থেকে আর তাকে দেখি নি। ছোকরাটা এমন করে উচ্ছন্ন গেল ! ওর বাবারও দোষ নেই। ওকে মানুষ কববার চেষ্টা যথেষ্ট করেছিল। কিন্তু যে মানুষ না হবার, তাকে মানুষ করে কার সাধ্যি ? পূজোর পরে সেজো মামার পত্রে জানিলাম, দত্তপুকুরের জমিদার কাছারী হইতে একখানা পুরানো কাপড় চুরি করিবার ফলে বন্দিনাথের জেল হইয়াছে তিন মাস। জেল হইতে