পাতা:রংপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (সপ্তম ভাগ).pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>>8 রঙ্গপুর-সাহিত্য-পরিষৎ পত্রিকা দ্বাণুক, দ্বাণুকের দুই অংশের একাংশ পরমাণু সুতরাং পরমাণু এই ত্ৰসরেণুর অবয়বের অবয়ব। অনুমান প্ৰণালী যথা—“ত্ৰসরেণু: সাবয়ব: চাক্ষুষদ্রব্যত্বাৎ ঘটবৎ” । যাহাতে অনুমান করা হয়, তাহাকে পক্ষ বলে ; যাহার অনুমান, তাহার নাম সাধ্য ; পঞ্চ ম্যান্ত পদই হেতু । এ স্থলে ত্র সরেণু পক্ষ, সাবয়বত্ব সাধ্য, দ্রব্যত্ব হেতু, ঘটপটাদি দৃষ্টান্ত-যে স্থলে হেতু ও সাধ্য থাকে তাহার নাম দৃষ্টান্ত । যেরূপ ত্ৰসরেণুর দৃশ্যত্ব থাকায় ঘটপটাদি দৃষ্টান্ত দ্বারা ত্ৰসরেণুর অবয়বের অনুমান হয়, সেই প্রকারে—“ত্ৰসরেণোরবয়বা: সাবয়বা; মহােদবয়বত্বাং কপালবৎ ইত্যনুমানেন তদবয়বসিদ্ধি:” অৰ্থাং ত্ৰসরেণুর অবয়বের মহােদবয়বত্ব থাকায় কপালাদি দৃষ্টান্ত দ্বারা ত্ৰসরেণুর অবয়ব তাহার অবয়বের অনুমান করা যায়। প্ৰথম অনুমান দ্বারা ত্ৰসরেণুর অবয়ব দ্ব্যগুকে হইতে পারে সিদ্ধ করিয়া পরে আবার দ্ব্যণকের অবয়ব পরমাণু সিদ্ধ করিয়াছে। পূৰ্ব্বোক্ত হেতু, পক্ষ প্রভৃতি স্থির রাখিয়া ত্ৰসরেণুর অবয়ব, তাহার অবয়ব ইত্যাদিক্ৰমে ভূরি ভুরি অবয়বের অনুমান করিয়া মূল অবয়বস্বরূপ পরমাণু প্ৰসিদ্ধ করাই মহর্ষিদের অভিপ্ৰায় । দৃশ্য দ্রব্যের ভূরি ভুরি অবয়ব থাকে ; যেমন ঘটাদি দৃশ্য দ্রব্য, উহাদের অনেক অবয়ব আছে।-ইত্যাকার ন্যায় বাক্য দ্বারা— এবং যদি ত্রসরেণুর ভূরি অবয়ব না থাকিত, তবে ত্ৰসরেণু অপেক্ষ শত সহস্র অংশে অতি সূক্ষ্ম বস্তু অণুবীক্ষণ দ্বারা দৃষ্ট হইত না—ইত্যাদি তর্ক দ্বারা বহু অবয়ব বিশিষ্ট হইলেই ঐ অবয়ব সমূহের এক একটি অবয়ব এক একটি পরমাণুস্বরূপ বলিয়া প্ৰসিদ্ধ হইবে। এইরূপ অণুবীক্ষণ দ্বারা যে সমস্ত সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম অণু দেখা যায়, তাহাদেরও এই প্রকার দৃশ্যত্ব হেতু দ্বারা অবয়বের অনুমান করা হইবে। এবং যে সকল অণু অণুবীক্ষণ দ্বারা দৃষ্ট হয় না। অথচ তাহাদের গন্ধ্যোপলব্ধি হইয়া থাকে, ঐ সকল অণু পক্ষ করিয়া ভ্রাণ-গ্ৰাহ্য গন্ধ হেতু দ্বারা উহাদের অবয়বের অনুমান করিতে হইবে। কোন কোন গ্ৰন্থকার বলেন ত্ৰসরেণুর অবয়বের অবয়ব, তাহার অবয়ব,- ইত্যাদিরূপে বহু অবয়বের অনুমান করিতে হইলে অনবস্থা দোষ ঘটিতে পারে, এজন্য ত্ৰসরেণুর অবয়বের অবয়ব পৰ্য্যন্ত অনুমান করিয়া ঐ অবয়বকে নিরাবয়ব পরমাণু স্বরূপে স্বীকার করা উচিত, অতিরিক্ত অবয়ব কল্পনা নিম্প্রয়োজন । যেরূপ নিরয়ব বিন্দু হইতে ক্ৰমে রেখাদির উৎপত্তি হয়, সেইরূপ নিরয়ব পরমাণু হইতে ঘটাদির উৎপত্তি হইয়া থাকে। র্যাহাদের জ্যামিতি শাস্ত্রে বিশেষ বুৎপত্তি আছে, তাহারা বিন্দুর সহিত পরমাণুর ও রেখাদির সহিত ঘটপটাদির তুল্যতা মনে করিলেই পরমাণুর প্রকৃত তাৎপৰ্য্য বুঝিতে পারিবেন। リメ* পরমাণুর নিত্যত । পরমাণুর উৎপত্তি এবং বিনাশ না থাকায় পরমাণুকে নিত্য বলা যায়। যত কিছু জন্য দ্রব্য আছে, সমস্তই পরমাণুসংযোগে উৎপন্ন হয় এবং পরমাণুবিয়োগে বিনষ্ট হয় ; কিন্তু পরমাণু উৎপন্ন বা বিনষ্ট হয় না। এ ব্ৰহ্মাণ্ডে দশ সহস্ৰ বৎসর পুর্বে যত পরমাণু ছিল, এখনও তাহাই আছে ও ইহার পরেও তাহাই থাকিবে । একটিমাত্র নৃত্যুনাধিক হয় নাই বা হইবে না।