পাতা:রংপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (সপ্তম ভাগ).pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন ১৩১৯, ৪র্থ সংখ্যা ] আসামের বৈষ্ণব-সম্প্রদায় । >b"》 উৎসবাদি হয়। উৎসবে পকান্ন ব্যবহৃত হয় না । মুগা, কলাই প্ৰভৃতি ভোগের প্রধান উপকারণ ৷ পৰ্ব্বাদি ছাড়া প্ৰত্যহ অনেকগুলি প্ৰসঙ্গ হয় । এইগুলি যথাক্রমে এইরূপ । প্ৰথম প্ৰসঙ্গ। --প্ৰভাতী কীৰ্ত্তন—“উঠরে উঠ বাপু গোপাল হে, নিশি পরিভাত ভৈল । কমলনয়ন বুলি ঘনে ঘন যশোদা ডাকিতে লৈল ॥” ইত্যাদি কোনও একটি প্রভাতী গীত। দ্বিতীয় প্রসঙ্গ-প্রভাতী ভটিয়া । ‘পাতেক সময়ে যশোয়া জননী। মুখ চুম্বিত শ্যাম জাগরণকে৷” ইত্যাদি কোন ও প্রভাতী ভটিয়া সুস্বরে পঠিত হয়। তৃতীয় প্রসঙ্গ -কলুপীর ঘোষা কিম্বা নামছন্দ ও শরণছন্দ এক পটল, আর কীৰ্ত্তন ঘোষা বা দশমের এক বা দুই ঘোষা কীৰ্ত্তন করিতে হয় ! চতুর্থ প্রসঙ্গ-ভক্তিরত্নাবলীর কোন ও এক উপদেশ অথবা কীৰ্ত্তন ঘোষা, নামঘোষা বা দশমের কোন এক ঘোষা পাঠ। পঞ্চম প্রসঙ্গ-ভাগবতপাঠ। যষ্ঠ প্ৰসঙ্গ-বৈ কালিক পাঠ, রত্নাবলী দশম কীৰ্ত্তন অথবা কোন শাস্ত্রগ্রন্থের এক অধ্যায় পাঠ ৷ সপ্তম প্রসঙ্গ –নাম ডাকা । অষ্টম প্ৰসঙ্গ-ভাগবতপাঠ। নবম প্রসঙ্গী--"গুণমালা পুথির কোন ও এক ঘোষা পাঠ । দশম প্ৰসঙ্গ- লীলাশনার কোনও এক ঘোষা পাঠ । একাদশ প্রসঙ্গ- -- জয় গুরু শঙ্কর *र्तिं `९४० ।। - যাকোর নাহি অনুপাম ৷ ইত্যাদি মাধবদেব রচিত গুরু ভটিয়া পাঠ । স্বাদশ প্রসঙ্গ-বড়গীত। ত্রয়োদশ প্রসঙ্গ-চতুর্গের অনুরূপ। চতুৰ্দশ প্রসঙ্গ—কোনও শাস্ত্ৰগ্ৰস্থের এক অধ্যায় পাঠ। পঞ্চদশ প্রসঙ্গ-ব্ৰাহ্মণদের সন্ধ্যা, গায়ত্রী ও গুরুদত্ত মন্ত্র এবং শূদ্রাদির গুরুদত্ত মন্ত্র জপ । এই পঞ্চদশ প্রসঙ্গের মধ্যে সকল গুলিই পার পর অনুষ্ঠান করিতে হইবে, এমন বাধাবাধি নিয়ম নাই। ঐ সকল বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির উপর ভিন্ন ভিন্ন কাৰ্যের ভার থাকে । মাত্র তাহদের উপস্থিতি অনুপস্থিতিতে কায্যের তারতম্য হয়। প্ৰতিবার তাল সম্বরণের পর কৃতাঞ্জলিপুটে এই প্রার্থনা হয়—জয় রাম বোলা ৷ জয় নারায়ণ বোলা ৷ জয় কৃষ্ণ বোলা । হরি বোলা ৷ এই বাক-চতুষ্টয় অতি সুললিত রাগে আবৃত্তি করা হইয়া থাকে এবং প্রতি বাক্যের অবসানে উপস্থিত জনমণ্ডলী ‘রাম নারায়ণ কৃষ্ণ হরি' এই চারি নাম মৃদুস্বরে দ্রুত উচ্চারণ করিয়া থাকে। উহা প্ৰায়শঃ চিত্তাকর্ষক ও নামে অনুরাগের উদ্দীপক । কীৰ্ত্তন ঘরে প্রত্যহ সকল লোক একত্র হইয়া এই সকল প্ৰসঙ্গ করিয়া থাকে। এতদ্ব্যতীত শৌচ এবং বাহা ও আভ্যন্তরিক পবিত্রতার প্রতি তীক্ষুদৃষ্টি রাখা হয়। বৈষ্ণবদিগের মহোৎসবের নাম শুনিলেই আমরা সাধারণের নানা ভোজ্য দ্রব্যের বিরাট আয়োজনের কথাই মনে করি। কিন্তু আসামের বৈষ্ণবসম্প্রদায় রসনার তৃপ্তি অপেক্ষা হৃদয়ের তৃপ্তির অধিকতর প্রয়াসী বলিয়াই বোধ হয়। শ্ৰী উমেশচন্দ্ৰ জে