জাতি-কুল সম্বন্ধে কোনরূপ দোষ বাহির করিতে পারিলেন না। কন্যাপক্ষীয়গণ আরও একটু অনুসন্ধান করিয়া জানিতে পারিলেন যে, সেই বৎসর সনাতনের পুত্র শচীন্দ্রনাথ প্রকৃতই ষ্টুডেণ্টশিপ পরীক্ষার উত্তীর্ণ হইয়া দশ হাজার টাকা পারিতোষিক পাইয়াছে।
উভয় পক্ষের ভিতরের অনুসন্ধান শেষ হইয়া গেল। তখন উভয় পক্ষের মতানুসারে বিবাহের দিন স্থিরীকৃত হইল। সনাতন উদ্যোগ করিয়া যাহাতে অতি শীঘ্র এই বিবাহ দেওয়াইতে পারেন, তাহাই করিয়া আসিতেছিলেন। কারণ, বিলম্ব হইলে, পাছে তাঁহার জুয়াচুরির কথা প্রকাশ হইয়া পড়ে; সেই ভয়ে, তিনি যত নিকটে বিবাহের দিন পাইলেন, তত নিকটেই দিনস্থির করিলেন। দুইদিন পরেই দিন হইল। বিবাহের পূর্ব্ব-দিবেই আয়ুর্বৃদ্ধ্যন্ন প্রভৃতি সমস্ত কার্য্য শেষ হইয়া গেল। বিবাহের দিবস সকাল সকাল বর লইয়া গিয়া বিবাহ-কার্য্য সম্পন্ন করাইলেন। দূর-পথের ভান করিয়া সনাতন নিজের নিতান্ত নিকট-আত্মীয় অর্থাৎ যাঁহাদের না পাইলে কার্য্য উদ্ধার হইবে না, তাঁহাদের দুই চারিজনমাত্রকে বরবাত্রী স্বরূপে লইয়া গিয়াছিলেন। যাহা হউক, যথানিয়মে বিবাহ শেষ হইয়া গেল।
এখানে বলা বাহুল্য যে, সনাতনের তৃতীয় পুত্র ষ্টুডেণ্টশিপ পরীক্ষোত্তীর্ণ শচীন্দ্রনাথের সহিত এ বিবাহ হইল না; সেই দুশ্চরিত্র মধ্যম পুত্র সতীন্দ্রনাথের সহিত হইয়া গেল।
এখন পাঠক! বুঝিতে পারিলেন যে, এইরূপ জুয়াচুরি করিয়া সনাতন আপনার মূর্খ, লম্পট ও সুরাপায়ী পুত্ত্রের বিবাহ দিয়া দুই সহস্র টাকা গ্রহণ করিলেন।