পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ক্ষয়ে এসেছে । পুরাণবাগীশ বস্তুবাগীশ, এ কোন জায়গায় আমাকে আনলে, আর কী করতেই বা আনলে ? অধ্যাপক জগতে যা-কিছু জানবার আছে, সমস্তই জানার দ্বারা ও আত্মসাৎ করতে চায়। আমার বস্তুতত্ত্ববিদ্যা প্রায় উজাড় করে নিয়েছে ; এখন থেকে থেকে রেগে উঠে বলছে, ‘তোমার বিদ্যে তো সিধকাঠি দিয়ে একটা দেয়াল ভেঙে তার পিছনে আর-একটা দেয়াল বের করেছে। কিন্তু প্রাণপুরুষের অন্দরমহল কোথায় ? ভাবলুম, এখন কিছুদিন ওকে পুরাণ-আলোচনায় ভুলিয়ে রাখা যাক ; আমার থলে ঝাড়া হয়ে গেছে, এখন পুরাবৃত্তের গঠি-কাটা চলুক। পঙক্তি ১০২১-১০৩০ X আমাকে কেন এনেচ, কি করতে হবে, বুঝিয়ে দাও । জগতে যা-কিছু জানবার আছে সমস্তই ও জানতে চায়। বস্তুতত্ত্ব নিয়ে আমার যতটা বিদ্যা ছিল প্রায় শেষ হয়ে এল । তুমি ত জান, আমি কেবল পুরাণ আলোচনা করেচি। তা বেশ, এখন কিছুদিন তোমার ঐ পুরাণ কথা নিয়েই চলুক। তুমি এখানে আছ কি সুখে। পুঁথি পত্র যা চাই তাই পাই। বিদ্যার মধ্যে ক্ৰমাগতই তলিয়ে চলেচি আর কিছুই জানিনে। সুখের কথা কি বলচ ? সুখ চাইওনি। তবে ? 頓 নেশা । জানার পরে জানা, তারপরে জানা, নেশার অন্ত নেই। কেবলি নতুন জানার টোক গিলতে গিলতে অন্য যা কিছু সব ভুলেই গেচি। [ও']কেও সেই নেশা জোগাচ্চ ? এতদিন ত তাই চলছিল। কিছুদিন থেকে হঠাৎ ক্ষেপে উঠে বলতে সুরু করেচে “কিছুই কোথাও পেচচ্চে না।” আমি ওকে বলি, নেশা কি কোথাও পৌঁছয় ? শুধু এগোয়। কেন, হঠাৎ কি [হল] ? ও বলে, “বস্তুর কথা ঢের শুনেচি, আর ভাল লাগে না। কথাটা ঠিক বটে আমরা বিদ্যার অন্তঃপুরে সিদ্ধ কাটচি– একটা দেয়াল ফুটো করা সাঙ্গ হতেই পিছনে দেখি আরেকটা দেয়াল। আশ্চৰ্য্য ! সেদিন ঠিক এই উপমাই ও দিয়েছিল। বাঘের মত মুঠো তুলে আকাশকে ঘুষো বাগিয়ে বল্লে, “সিঁধ কেটে দেয়ালের অন্ত পাব না, ভাঙনের পাটকেল চাপা পড়ে পড়েই মন বুজে যাবে। যে আলোর সামনে দেয়াল چهs) o\ >૦૨૯ >○○○