পাতা:রঙ্গলাল-গ্রন্থাবলী.djvu/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سجُنت ভাষায় কাব্য রচনায় প্রথমোদ্যোগ-পদবীতে আমি পদার্পণ করিলাম, তৎসিদ্ধিপক্ষে কতদূর পর্য্যন্ত কৃতকাৰ্য্য হইয়াছি, তাঁহা ভবিষ্যতের গর্ভস্থ। বিশেষত: এবশ্বকার বিষয়ে দোষ-গুণ প্রভূতির পর্যাবসান সুভাবুক পাঠকদিগের বিচারাধীন । তথাহি--- “কবিতাবসমাধুর্য্যং কবিবেত্তি ন তৎ কবি । ভবানী ভ্ৰ কুটভঙ্গীং ভবে বেত্তি ন ভূধর: ॥” এ স্থলে ইহাও জিজ্ঞাস্য হইতে পারে, আমি এতদেশীয় প্রাচীন পুরাণেতিহাস হইতে কোন উপাখ্যান না লইয়। আধুনিক রাজপুত্রেতিহাস হইতে তাহ গ্ৰহণ করিলাম, ইহার কাবণ কি ? ---এতদুত্তবে বক্তব্য এই যে, পুরাণেতিহাসে বণিত বিবিধ আখ্যান ভারতবর্মীয সর্বত্র সকল লোকের কণঠস্থ বলিলেই হয়. বিশেষতঃ ঐ সকল উপাখ্যানমধ্যে অনেক অলৌকিক বর্ণনা থাকাতে অধুনাতন কৃতবিদ্য যুবকদিগের তত্তাবৎ শুদ্ধার্হ মহে এবং এতদেশীয় জনসমাজে বিদ্যা-বৃদ্ধির বান্ধব মহানুভবদিগের মতে তদ্রুপ অদ্ভুত-বসাশিত কাবা-প্রবাহে ভারতবর্মীয় যুবকদিগের অত্যুবর্বর চিত্তক্ষেত্র পুবিত কর। কৰ্ত্তব্য নহে । পরন্তু ভারতবর্ষের স্বাধীনতাব অন্তৰ্দ্ধানকালবিধি বৰ্ত্তমান সময় পর্য্যন্তয়েই ধারাবাহিক প্রকৃত পুরাবৃত্ত প্রাপ্তব্য। এই নিদিষ্ট কাল মধ্যে এ দেশের পূর্বতন উচচতম প্রতিভা ও পরাক্রমের যে কিছু ভণুবিশেষ, তাহ। রাজপুতানা দেশেই ছিল। বীরত্ব, ধীরত্ব, ধাম্বিকত্ব প্রভৃতি নানা সদৃগুণালঙ্কারে রাজপুতেরা যেরূপ বিমণ্ডিত ছিলেন, তাহাদিগের পত্নীগণও সেইরূপ সতীত্ব, বিদুষীত্ব এবং সাহসিকত্বগুণে পুসিদ্ধ ছিলেন। অতএব স্বদেশীয় লোকের গরিমা-প্রতিপাদ্য পদ্যপাঠে লোকের আশু চিত্তাকর্ষণ এবং তদৃষ্টাস্তের অনুসরণে প্রবৃত্তি পুধাবন হয়, এই বিবেচনায় উপস্থিত উপাখ্যান রাজপুত্রেতিহাস অবলম্বনপূর্বক মৎকর্তৃক রচিত হইল । অপিচ, কিশোরকালাবধি কাব্যামোদে আমার প্রগাঢ় আসক্তি, সুতরাং নানা ভাষার কবিতা কলাপ অধ্যয়ন বা শবণ করত অনেক সময় সংবরণ করিয়া থাকি। আমি সর্বাপেক্ষা ইংলওঁীয় কবি রঙ্গলাল গ্রন্থাবলী তার সমধিক পর্য্যালোচনা করিয়াছি এবং সেই বিশুদ্ধ প্রণালীতে বঙ্গীয় কবিতা রচনা করা আমার বহুদিনের অভ্যাস। বাঙ্গালা সমাচারপত্রপুঞ্জে আমি চতুর্দশ বা পঞ্চদশ বর্ষ বয়সে উক্ত প্রকার পদ্যপ্ৰকটন করিতে আরম্ভ করি । তত্তাবৎ • যদিও অনেকের নিকট সমাদৃত হউক, কিন্তু সেই আদর তাহাদিগের মহত্ত্ব ব্যতীত আমার ক্ষমতা-পরিচায়ক নহে । আমার এ স্থলে এ কথা লিখিবার তাৎপর্য্য এই যে, উপস্থিত কাব্যের স্থানে স্থানে অনেকানেক ইংলণ্ডীয় কবিতার ভাবাকর্ষণ আছে, সেই সকল দর্শনে ইংলণ্ডীয় কাব্যামোদিগণ আমাকে ভাবহারী জ্ঞান না করেন, আমি ইচছাপূর্বকই অনেক মনোহর ভাব স্বীয় ভাষায় প্রকাশ-কারণ চেষ্টা পাইয়াছি, যেহেতু তাহ করণের দুই ফল । তাদেী ইংলণ্ডীয় ভাষায় অনভিজ্ঞ অনেক এতদেশীয় মহাশয় এরূপ জ্ঞান করেন, তদৃভাষায় উত্তম কবিতা নাই ; সেই ভ্ৰমাপনয়ন করা বিশেষ অবিশ্যক হইয়াছে। দ্বিতীয়তঃ ইংলণ্ডীয় বিশুদ্ধ প্রণালীতে যত বঙ্গীয় কাব্য বিরচিত হইবে, ততই ব্ৰীড়াশূন্য কদৰ্য্য কবিতা-কলাপ অন্তৰ্দ্ধান করিতে থাকিবে এবং তত্তাবতের প্রেমিক-দলেরও সংখ্যা হ্রাস হইয়া আসিবে। পরস্তু এই উপলক্ষে ইহাও নিবেদ্য, আমি সকল স্থলেই যে ইংলণ্ডীয় মহাকবিদিগের ভাব গ্ৰহণ করিয়াছি, এমত নহে । অনেক ভাব স্বতই আসিয়া অনেকের মনে একেবারে সমুদিত হইয়া থাকে, সুতরাং তাহাদিগের অগ্রপশ্চাৎ প্রকাশমতে কাব্যকারের প্রতি চৌর্য্যাভিযোগ প্রয়োগ করা কৰ্ত্তব্য নহে। কোন ইংলণ্ডীয় সুকবি কহেন--“আমাদিগের মধ্যে একদল বিদূমিক আছেন, তাহারা সম্ভাবিত সকল ভাবকেই পুরাতন জ্ঞান করিয়া থাকেন। তাহাদিগের এমত জ্ঞান নাই যে, পৃথিবীতে ক্ষুদ্র বৃহৎ স্বাভাবিক উৎসসমূহ আছে। তাহার কোন প্রবাহ দৃষ্টিমাত্রে বোধ করেন, তাহা অমুক মনুষ্যের পুষ্করিণী হইতে প্রবাহিত হইয়া আসিতেছে। এক্ষণে কাব্য কি ?---এবং তদালোচনার ফল কি ?---এই দুই সুকঠিন পুণুের মীমাংগকিলেপ কিঞ্চিৎ লেখা যাইতেছে, যেহেতু, তদুভয় বিষয়ে