পাতা:রঙ্গলাল-গ্রন্থাবলী.djvu/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৰ্ম্মদেবী ইথে অপরাধ কিবা কহ রাজস্থত। ক্ষত্রিয়-সন্তান তুমি নানা গুণযুত। বিবেচনা কর সাধু, সাধু নাম ধর, কেন হে গহিত হেন আচরণ কর ?” উত্তরে কহিছে সাধু, “শুন হে পাঠান । মানিলাম যা বলিলে সব সপমাণ । বাণিজ্য বসতে লক্ষী শাস্ত্রের লিখন । সকল দেশের তায় উন্নতি সাধন। ক্রেতা-বিক্রেতার মুখ, বাণিজ্যের ফল। বাণিজ্য রাজ্যের শক্তি, সাধ্য আর বল । কি কারণে এ হেন বাণিজ্য-সুখ-সেতু । অবরোধ করি আমি, শুন তার হেতু।। পূর্বে এই পুণ্যভূমি বাণিজ্যের ধনে । ধনবতী হয়েছিল, বিখ্যাত ভুবনে । দিগৃদিগন্তর হতে বাহিয়৷ সাগর। এ দেশে আসিত কত বণিক-নিকর । বাণিজ্য-সামগ্ৰী নানা ল’য়ে যেত দেশে । ভারতের ধনবৃদ্ধি হ'তো সবিশেষে । এক এক নগরের কত ছিল ধল । অদ্যাপি না হয় তাঁর সংখ্যা নিরূপণ । এক কান্যকুব্জপুরে, অপূৰ্ণ আখ্যান। ' বাইশ হাজার ছিল গুয়ার দোকান। সুবর্ণ-কলস-পাত্র আগারে তাগারে । দেবালয়ে রতুরাশি ছিল স্তুপাকারে । সোমনাথ মধুপুরী আর কলিঞ্জরে । নিধিপূর্ণ মন্দিরের পঞ্জরে পঞ্জরে । কে হরিল সেই সব অমূল্য রতন ? কে হরিল এ সকল কুবেরের ধন ? কে করিল পুণ্য-ভূমি দুঃখেতে নিক্ষেপ ? কে দিল তাহার দেহে যাতনা-প্রলেপ ? অনুপমা ভারতের পতিবতাগণ । কে করিল তাহীদের মর্য্যাদা হরণ ? কে করিল নগধুনিকর-শোভা নাশ ? তোমরা জান না কি হে সেই ইতিহাস ? যেই দুষ্ট দূরাশয় হরিল এ সব । তোমরা তাহার জাতি, জ্ঞাতি, গোত্ৰভব । হাজার মঙ্গল-ব্রতে হয়ে এস ব্ৰতী । বিশ্বাস না হবে আর তোমাদের পুতি । এরূপ বাণিজ্যচছলে কত জাতি এসে । করিলেন প্রভুত্ব স্থাপন নীনাদেশে। অতএব কিবা পূীতি তোমাদের প্রতি ? দুৰ্গতির প্রতিফল, স্বরূপ দুৰ্গতি । কি ছাঁর বাণিজ্য-দ্রব্য এ দেশে এনেছ ? তোমাদের দেশ বড় উবর্বর জেনেছ ? জান না ভারতভূমি লক্ষ্মীর আবাস ? কত শস্য জনে ইর্থে বিরহে পয়াস ? কোন মেবা’ নাহি জন্মে ইহার ভিতর ? করে এস হিমালয়ে নয়ন গোচর । ইরাণেতে যত "মেবা’ জনমিয়া থাকে । এ দেশের কত স্থানে কত বৃক্ষে পাকে । তা ভিনু অনেক ‘মেব।' হেনরূপ আছে। এ দেশ ব্যতীত আর কোথা নাহি বাঁচে । রসাল রসাল ফল, কিব৷ তুল্য তাঁর ? সিন্ধু মর্থ। সুধা চেয়ে মিষ্ট তার তাঁর । আর এক ফল ফলে শূন্যের উপর । কারণ সলিলে পূর্ণ তাহার উদর। এমন শীতল মিষ্ট কোথ। অাছে নীর ? পৗনমাত্র তুষিতেন জুড়ায় শীর। কিবা শস্য সুমধুর আস্বাদে উল্লাসে। পথিকের শাস্তি কুস্তি-ক্ষুধা তৃষ্ণা নাশে । আর এক ফল আছে, নাম আনারস । নন্দন-কানন থেকে বুঝি অীনা রস । নন্দনপতির ন্যায় সহস্ৰ-লোচন। উদ্যান উজ্বজল করে কাঞ্চন-বরণ। শিরেতে পল্লব-গুচছ, পুচেছর আকার । হেমময় কিরীট কাননে অবতার। স্বপূর্ব সৌরভামোদে মেতে উঠে মন । ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে যুটে মধুকরগণ। বিফলে ছুটিযে আসা, বিফল সে যোট । আলির অসাধ্য খেতে রস এক ফোট । যথা কৃপণের ধনে, যাঁচক বঞ্চিত। গতায়াত সার, লাভ না হয় কিঞ্চিৎ ৷ এইরূপ, কতরূপ, এ দেশের ফল । বিশেষিয়া বাহুল্য বর্ণন যে সকল। : অনিয়াছ রঞ্জন, সুগন্ধ, সঙ্গে যাহা । এ দেশের দুর্লভ কিছুই নহে তাঁহা ।