একটা চিঠির মধ্যে আছে:
‘প্রতিদিনের অভ্যাসের জড়ত্ব হঠাৎ একমুহূর্তের জন্য এক-এক সময়ে কেন যে একটুখানি ছিঁড়ে যায় জানি নে, তখন যেন সদ্যোজাত হৃদয় দিয়ে আপনাকে, সম্মুখবর্তী দৃশ্যকে এবং বর্তমান ঘটনাকে অনন্তকালের চিত্রপটের উপর প্রতিফলিত দেখতে পাই।··· আমি অনেক সময়েই একরকম ক’রে জীবনটাকে এবং পৃথিবীটাকে দেখি যাতে ক’রে মনে অপরিসীম বিস্ময়ের উদ্রেক হয়, সে আমি হয়তো আর কাউকে ঠিক বোঝাতে পারব না।’
আর একটা চিঠির খানিকটা অংশ এখানে না দিয়া থাকিতে পারিলাম না:
‘আমার বিশ্বাস, আমাদের প্রীতি মাত্রই রহস্যময়ের পূজা; কেবল সেটা আমরা অচেতনভাবে করি। ভালোবাসা মাত্রই আমাদের ভিতর দিয়ে বিশ্বের অন্তরতম একটি শক্তির সজাগ আবির্ভাব, যে নিত্য আনন্দ নিখিল জগতের মূলে সেই আনন্দের ক্ষণিক উপলব্ধি।’
এইবার সোনার তরী ও চিত্রার “জীবনদেবতা” কবিতাগুলির সম্বন্ধে কথা বলিবার সময় আসিয়াছে।
আমি সেই কথা বলিয়াই আরম্ভ করিয়াছি। আমি দেখাইবার চেষ্টা পাইয়াছি যে, যখন প্রবল অনুভূতি এবং কল্পনা কোনো একটি খণ্ডের মধ্যে আপনাকে উপলব্ধি করিতে চায়— যেমন বাহ্য সৌন্দর্য বা মানবপ্রীতিতে ধরা যাক— তখন কিছুকালের মতো সেই খণ্ডতা তাহার কাছে সব হইয়া উঠে, অনুভূতি এবং কল্পনা তাহাকে আপনার ভাবের দ্বারা সম্পূর্ণ করিয়া দেখিবার চেষ্টা করে। ইংরেজি অনেক প্রেমের কাব্যে আমরা ইহার পরিচয় পাইয়াছি। কিন্তু কবির মূলসুর কিনা সর্বানুভূতি, সেইজন্য খণ্ড হৃদয়াবেগ আপনার ইন্ধনকে আপনি নিঃশেষিত
৫০