পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৬০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

y অনুবাদ-চর্চা むvó খাটিতে হইতেছে। এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের সময়ে আমাদের কাহারও দিনই সহজভাবে কাটিতেছে না । তোমাকে আমাদের পরিবারমণ্ডলের অকপট প্রীতি জানাইতেছি । › ዓ © অষ্টাদশ শতাব্দী পর্য্যন্ত সকল যুগের সাহিত্যেই দেখা যায় যে, ধূমকেতুকে লোকে তখন দুঃখের ভীষণ অগ্রদূত বলিয়া বিশ্বাস করিত। লোকের সাধারণতঃ ধারণা ছিল যে, নক্ষত্র ও উল্কা ভবিষ্যৎ শুভ ঘটনার, বিশেষ করিয়া বীর ও মহৎ জন-শাসকদের জন্মের ভাবী বার্তা বলে। স্বৰ্য্যচন্দ্রের গ্রহণগুলি পার্থিব দুর্ঘটনায় প্রকৃতির দুঃখাতুভব ব্যক্ত করে এবং অন্যান্য সমস্ত দৈব সঙ্কেতসমষ্টির অপেক্ষ ধূমকেতুই গুরুতর অমঙ্গলের পূৰ্ব্বস্বচনা। যাহারা ইহা ভগবানের প্রেরিত সঙ্কেত বলিয়া স্বীকার না করিত, তাহারা নাস্তিক নামে কলঙ্কিত হইত। John Knox ইহাদিগকে দেবতার ক্রোধের চিহ্ন বলিয়া বিশ্বাস করিতেন, অপর অনেকে পোপপূজকদিগকে সমূলে বিনাশ করিবার জন্য রাজার প্রতি সঙ্কেত ইহার মধ্যে দেখিয়াছিল। Luther ইহাদিগকে সয়তানের কীৰ্ত্তি বলিয়া ঘোষণা করিয়াছিলেন এবং ইহাদিগকে কুলটা তারা বলিতেন । S q8 Milton বলেন যে, ধূমকেতু তাহার ভয়াবহ কেশজাল ঝাড়া দিয়া মহামারী ও যুদ্ধ বিগ্রহ বর্ষণ করে। রাজা হইতে আরম্ভ করিয়া দীনতম কৃষক পৰ্য্যন্ত সমগ্র জাতি এই অমঙ্গলের দূত সকলের আবির্ভাবে ক্ষণে ক্ষণে দারুণতম আতঙ্কে নিমগ্ন হইত। ১৪৫৬ খ্ৰীষ্টাব্দে, হালির নামে পরিচিত ধূমকেতুর পুনরাগমনে যেমন সুদূরব্যাপী ভয়ের সঞ্চার হইয়াছিল, পূৰ্ব্বে আর কখনও তেমন হইয়াছে বলিয়া জানা যায় নাই । বিধাতার শেষ বিচারের দিন আগতপ্রায়—এই বিশ্বাস ব্যাপক হইয়াছিল। লোকে সমস্ত আশা ভরসা ছাড়িয়া দিয়া তাহাদের বিনাশ দণ্ডের জন্য প্রস্তুত হইতে লাগিল । ১৬০৭ খ্ৰীষ্টাব্দে ইহা আবার স্বীয় আবির্ভাবে জগৎকে শঙ্কিত করিয়া তুলিল এবং ভজনালয়গুলি ভয়াভিহত জনসঙ্ঘে পূর্ণ হইয়া গেল । S q & তৎকালীন প্রেগ নগরের রাজজ্যোতিষী Kepler শাস্তচিত্তে ইহার গতিপথ অনুসরণ করিয়া আবিষ্কার করিলেন যে, সেই পথ চন্দ্রের ভ্রমণ কক্ষের বাহিরে । Kepler-এর এই আবিষ্কারের ঘোষণা তুমুল বাদবিসম্বাদ স্বষ্টি করিল, কারণ, ইহা ধূমকেতু-সম্বন্ধীয় অন্ধ সংস্কারসকলের মূলে আঘাত করিয়াছিল। সপ্তদশ শতাব্দীর ግ8