পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুনশ্চচ কেমন একটা ভয় লাগল। মনে, ও বুঝি বঁাচবে না বেশি দিন । কেননা বড়ো করুণ ছিল ওর মুখ, যেন অকালবিচ্ছেদের ছায়া ভাবীকাল থেকে উন্টে এসে পড়েছিল ওর বড়ো বড়ো কালো চোখের উপরে । সাহস, হত না ওকে সঙ্গ ছাড়া করি । কাজ করছি আপিসে বসে, হঠাৎ হত মনে যদি কোনো আপদ ঘটে থাকে । বঁকিপুর থেকে মাসি এল ছুটিতে বললে, “ মেয়েটার পড়াশুনো হল মাটি । মুখু মেয়ের বোঝা বইবে কে আজকালকার দিনে ।” লজা পেলেম কথা শুনে তার, বললেম, কালই দেব ভর্তি করে বেথুনে ৷” ইস্কুলে তো গেল, কিন্তু ছুটির দিন বেড়ে যায় পড়ার দিনের চেয়ে । সে চক্রান্তে বাপেরও ছিল যোগ । ফিরে বছর মাসি এল ছুটিতে ; বললে, “এমন করে চলবে না । নিজে ওকে যাব নিয়ে, বোর্ডিঙে দেব বেনারসের স্কুলে, ওকে বাচানো চাই বাপের স্নেহ থেকে । মাসির সঙ্গে গেল চলে । অশ্রনইন অভিমান নিয়ে গেল বুক ভরে যেতে দিলেম বলে । বেরিয়ে পড়লেম বন্দ্রিনাথের তীর্থযাত্রায় নিজের কাছ থেকে পালাবার বেঁয়াকে । চার মাস খবর নেই । মনে হল গ্ৰন্থি হয়েছে আলগা শুরুর কৃপায় । মেয়েকে মনে মনে সঁপে দিলেম দেবতার হাতে, বুকের থেকে নেমে গেল বোঝা । R\962