পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sలన রবীন্দ্র-রচনাবলী রাজা । সব রকমের খ্যাপামিই তো হল। হাসির সঙ্গে কার, মধুরের সঙ্গে কঠোর, এখন বাকি রইল কী ? নটরাজ। বাকি আছে অকারণ উৎকণ্ঠ । কালিদাস বলেন, মেঘ দেখলে মুর্থী মানুষও আনমনা হয়ে যায়। এইবার সেই যে "অন্যথাবৃত্তি চেত", সেই যে পথ-চেয়েথাকা আনমনা, তারই গান হবে । নাট্যাচার্য, ধরে হে – পুব হাওয়াতে দেয় দোলা আজ মরি মরি। হৃদয়-নদীর কূলে কুলে জাগে লহরী। পথ চেয়ে তাই একলা ঘাটে বিনা কাজে সময় কাটে, পাল তুলে ওই আসে তোমার মুরেরই তরী। ব্যথা আমার কুল মানে না বাধা মানে না, পরান আমার ঘুম জানে না জাগা জানে না । মিলবে যে আজ অকুল পানে, তোমার গানে আমার গানে, ভেসে যাবে রসের বানে আজ বিভাবরী । নটরাজ। বিরহীর বেদন রূপ ধ'রে দাড়াল, ঘনবর্ষার মেঘ আর ছায়া দিয়ে গড়। সজল রূপ। অশাস্ত বাতাসে ওর সুর পাওয়া গেল কিন্তু ওর বাণীটি আছে তোমার কণ্ঠে, মধুরিকা । অশ্রুভরা বেদন দিকে দিকে জাগে । আজি স্যামল মেঘের মাঝে বাজে কার কামনা | চলিছে ছুটিয়া অশাস্ত বায়, ক্ৰন্দন কার তার গানে ধ্বনিছে, করে কে সে বিরহী বিফল সাধন । রাজা। আর নয় নটরাজ, বিরহের পালাটাই বড়ে বেশি হয়ে উঠল, ওজন ঠিক पंकि८झ मl । নটরাজ। মহারাজ, রসের ওজন আয়তনে নয়। সমস্ত গাছ একদিকে, একটি ফুল একদিকে, তবু ওজন ঠিক থাকে। অসীম অন্ধকার একদিকে, একটি তার একদিকে, তাতেও ওজনের ভূল হয় না । ভেবে দেখুন, এ সংসারে বিরহের সরোবর চারিদিকে ছলছল করছে, মিলনপদটি তারই বুকের একটি দুর্লভ ধন।