পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

थांढौ । 83) সমাজে পরম্পরের আপলে তৈরি-ক্ষর সংকেতমাত্র। দুইয়ের ৰোগে কাব্য। গাছ শব্দটা শুনলে গাছ তারাই দেখে যাদের মধ্যে এ সম্বন্ধে একটা জাপসে বোঝাপড়া আছে। তেমনি এদের নাচের মধ্যে শুধু ছন্দ থাকলে তাতে আখ্যানবৰ্ণনা চলে না, সংকেতও আছে ; এই দুইয়ের যোগে এদের নাচ । এই নাচে রসনা বন্ধ করে এরা সমস্ত দেহ দিয়ে কথা কইছে ইঙ্গিতে এবং ভঙ্গীসংগীতে। এদের নাচে যুদ্ধের যে-রূপ দেখি কোনো রণক্ষেত্রে সেরকম যুদ্ধ দূরত:ও সম্ভব নয়। কিন্তু যদি কোনো স্বর্গে এমন বিধি থাকে যে, ছন্দে যুদ্ধ করতে হবে, এমন যুদ্ধ যাতে ছন্দ-ভঙ্গ হলে সেটা পরাভবেরই সামিল হয়, তবে সেটা এইরকম যুদ্ধই হত। বাস্তবের সঙ্গে এই অনৈক্য নিয়ে বাদের মনে অশ্রদ্ধা বা কৌতুক জন্মায় শেকসপিয়রের নাটক পড়েও তাদের হাল উচিত— কেননা, তাতে লড়তে লড়তেও ছন্দ, মরতে মরতেও তাই। সিনেমাতে আছে রূপের সঙ্গে গতি, সেই সুযোগটিকে যথার্থ আর্টে পরিণত করতে গেলে আখ্যানকে নাচে দাড়-করানো চলে। বলা বাহুল্য, বাইনাচ প্রভৃতি যে-সব পদার্থকে আমরা নাচ বলি তার আদর্শ এ নাচের নয়। জাপানে কিয়োটোতে ঐতিহাসিক নাট্যের অভিনয় দেখেছি ; তাতে কথা আছে বটে ; কিন্তু তার ভাবভঙ্গী চলাফেরা সমস্ত নাচের ধরনে ; বড়ো আশ্চর্য তার শক্তি। নাটকে আমরা যখন ছন্দোময় বাক্য ব্যবহার করি তখন সেই সঙ্গে চলাফেরা হাবভাব যদি সহজ রকমেরই রেখে দেওয়া হয় তা হলে সেটা অসংগত হয়ে ওঠে, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। নামেতেই প্রকাশ পায়, আমাদের দেশে একদিন নাট্য অভিনয়ে সর্বপ্রধান অঙ্গই ছিল নাচ, নাটক দেখতে যারা আসে, পশ্চিম মহাদেশে তাদের বলে অডিয়েনা, অর্থাৎ শ্রোতা। কিন্তু, ভারতবর্ষে নাটককে বলেছে দৃপ্তকাব্য ; অর্থাৎ তাতে কাব্যকে আশ্রয় করে চোখে দেখার রস দেবার छरिछहे अछिनम्न । এই তো গেল নাচের দ্বারা অভিনয়। কিন্তু বিশুদ্ধ নাচও আছে। পরশু রাত্রে সেটা গিয়ানয়ারের রাজবাড়িতে দেখা গেল। স্বন্দর-সাজ-করা দুটি ছোটো মেয়ে— মাথায় মুকুটের উপর ফুলের (ওগুলি একটু নড়াতেই ছলে ওঠে। গামেলান বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে দুজনে মিলে নাচতে লাগল। এই বাদ্যসংগীত আমাদের সঙ্গে ঠিক মেলে না। আমাদের দেশের জলতরঙ্গ বাজনা আমার কাছে সংগীতের ছেলেখেলা বলে ঠেকে। কিন্তু, সেই জিনিসটিকে গভীর, প্রশস্ত, স্থনিপুণ বহুষ মিশ্রিত বিচিত্র আকারে এদের বাস্তসংগীতে যেন পাওয়া যায়। রাগরাগিণীতে আমাদের সঙ্গে কিছুই মেলে না ; যেঅংশে মেলে সে হচ্ছে এদের স্বাঙ্গের ধ্বনি, সঙ্গে করতালও আছে। ছোটাে বড়ো ঘন্ট এদের এই সংগীতের প্রধান অংশ। আমাদের দেশের নাট্যশালায় কার্ট বাজনার