পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छ्न्न 8eS বোন । আট মাত্রায় তাহার পা পড়ে, কেবল তাহার পায়ে মিলের মলজোড়ার ঝংকারটা কিছু বেশি। বাহিরের চেহারা দেখিয়া ছন্দের জাতিনির্ণয় করায় যে প্রমাদ ঘটিতে পারে তাহার একটা দৃষ্টান্ত এইখানে দিই। একদিন আমার মাথায় একটা ছয় মাত্রার ছন্দ আসিয়া হাজির হইয়াছিল। তাহার চেহারাটা এইরকম— প্রথম শীতের মাসে, শিশির লাগিল ঘাসে, হস্থ করে হাওয়া আসে হিহি করে কাপে গাত্র । গোট কয়েক শ্লোক যখন লেখা হইয়া গেছে তখন হঠাৎ হশ হইল যে, আকারেআয়তনে চৌপদীর সঙ্গে ইহার কোনো তফাত নাই, অতএব পাঠকেরা আট মাত্রার কোক দিয়াই ইহা পড়িবে— তখন আমি হাল ছাড়িয়া দিয়া চৌপদীর দস্তরেই লিখিতে লাগিলাম। এই ছন্দটিকে ছয় মাত্রার কায়দায় পড়িতে হইলে নিম্নলিখিত-মত ভাগ হয়— | | প্রথম শীতের | মাসে— | | শিশির লাগিল। ঘাসে— আমাদের দেশের সংগীতের তাল যদি আপনার জানা থাকে তবে এক কথায় বলিলেই বুঝিবেন, চৌপদীতে কাওয়ালির লয়ে বোক দিতে হয় এবং আমি যে ছন্দটা লক্ষ্য করিয়া লিখিতেছিলাম তাহার তাল একতালা। কাওয়ালি দুইবর্গ মাত্রার তাল, এবং একতালা তিনবর্গ মাত্রার । ত্রিপদীরও মোটের উপর আট মাত্রার চাল । যথা— | | ভবানীর কটুভাযে । লজ্জা হৈল কীর্তিবালে, | l ক্ষুধানলে কলেবর । দহে । তৃতীয় পদে দুটা মাত্রা বেশি আছে ; তাহার কারণ, যে চতুর্থ পদটি থাকিলে এই ছন্দের ভারসামঞ্জস্ত থাকিত সেটি নাই। ক্ষুধানলে কলেবর’ পর্যন্ত আসিয়া থামিতে গেলে ছন্দটা কণত হইয়া পড়ে এইজন্ত দহে একটা যোগ করিয়া ছোটো একটি ঠেক দিয়া উহাকে খাড়া রাখা হইয়াছে। চতুষ্পদ জন্তুর পায়ের তেলোটা চওড়া হয় না, কিন্তু মাহুষের খাড়া শরীরের টলটলে ভারটা দুই পায়ের পক্ষে বেশি হওয়াতেই তাহার