পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

δ ή छ७ान्न छदि বড়োলোকের ছেলে বলে শুমাির ছিল মনে, অত্যাচারে তারই প্ৰমাণ দিত সকলেখনে । বাঁটুর হবে সাতারখেলা, বটু চলছে ঘাটে, এসেছে যেই দুলালচাদের গোলা খেলার মাঠে অকারণে চাবুক নিয়ে দুলাল এলো তেড়ে ; মাধো বললে, “মারলে কুকুর ফেলব তোমায় পেড়ে ।” উচিয়ে চাবুক দুলাল এল, মানল নাকো মানা, চাবুক কেড়ে নিয়ে মাধো, করলে দু-তিনখানা । দাড়িয়ে রইল মাধো, রাগে কাপছে থরোথিরো, বললে, “দেখব সাধ্য তোমার, কী করবে তা করো ।” দুলাল ছিল বিষম। ভীতু, বেগ শুধু তার পায়ে ; নামের জোরেই জোর ছিল তার, জোর ছিল না। গায়ে । দশ-বিশজন লোক লাগিয়ে বাপ আনলে ধরে, মাধোকে এক খাটের খুরোয় বাধল কষে জোরে । বললে, “জনিসনেকে বেটা, কাহার অন্ন ধারিস, এত বড়ো বুকের পাটা, মনিবকে তুই মর্যারিস । আজ বিকালে হাটের মধ্যে হিঁচড়ে নিয়ে তোকে, দুলাল স্বয়ং মারবে চাবুক, দেখবে সকল লোকে ।” মনিববাড়ির পেয়াদা এল দিন হল যেই শেষ । দেখলে দড়ি আছে পড়ি, মাধো নিরুদ্দেশ । মাকে শুধায়, “এ কী কাণ্ড ।” মা শুনে কয়, “নিজে আপন হাতে বাধন তাহার। আমিই খুলেছি যে । মাধো চাইল চলে যেতে ; আমি বললেম, যেয়ো, NR TN9ANGRE OG S VEG GPe ” স্বামীর 'পরে হানল দৃষ্টি দারুণ অবজ্ঞার ; বললে, “তোমার গোলামিতে ধিক সহস্রাবার ।” পেরোলো বিশ-পঁচিশ বছর ; বাংলাদেশে গিয়ে আপন জাতের মেয়ে বেছে মাধো করল বিয়ে । ছেলে মেয়ে চলল বেড়ে, হল সে সংসারী ; কোনখানে এক পাটকলে সে করতেছে সর্দারি । এমন সময় নরম যখন হল পাটের বাজার মাইনে ওদের কমিয়ে দিতেই, মজুর হাজার হাজার ধর্মঘটে বাধল। কোমর ; সাহেব দিল ডাক ; বললে, “মাধো, ভয় নেই তোর, আলগোছে তুই থাক । দলের সঙ্গে যোগ দিলে শেষ মরবি-যে মার খেয়ে ।” মাধো বললে, “মরাই ভালো এ বেইমানির চেয়ে ।” শেষপালাতে পুলিস নামল, চলল গুতোগাতা ; কারো পড়ল হাতে বেড়ি, কারো ভাঙল মাথা । মাধো বললে, “সাহেব, আমি বিদায় নিলেম কাজে, অপমানের অন্ন আমার সহ্য হবে না যে ।” 9