পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ8b- রবীন্দ্র-রচনাবলী মুখে আসে তাই বকি, আর এই সমস্ত অনর্থ বাধে । আমার চিরকালের ঘরের স্ত্রীটিকেই যদি ঘরে না রাখতে পারব তো তোদের স্ত্রী জুটিয়ে দিয়ে আমার কী এমন পরমার্থ লাভ হবে বল দেখি। না, তোদের কারো সঙ্গে আমি আর বাক্যালাপ করছিনে । বিনোদবিহারী ও নলিনাক্ষের প্রবেশ বিনোদবিহারী। চন্দরদী, তুমি আমার উপর রাগ করে চলে এলে ভাই, আমি আর থাকতে পারলুম না। চন্দ্রকান্ত । না ভাই, তোদের উপর কি আমি রাগ করতে পারি। তবে মনে একটু দুঃখ হয়েছিল তা স্বীকার করি । বিনোদবিহারী । কী করব চন্দরদ । আমি এত চেষ্টা করছি কিছুতেই পেরে উঠছিনে— চন্দ্রকাস্ত। কেন বল দেখি । ওর মধ্যে শক্তটা কী । মেয়েমানুষকে ভালোবাসতে পারিসনে ? তুই কি কাঠের পুতুল । নলিনাক্ষ । চন্দ্রবাবুর সঙ্গে কিন্তু আমার মতের একটুও মিল হচ্ছে না। ভালোবাসা কখনো জোর করে হয় না। একটা গান আছে— ভালোবাসিবে ব’লে ভালোবাসিনে । আমার স্বভাব এই তোমা বই আর জানিনে । আমি কিন্তু বিহু, সম্পূর্ণ তোমার দিকে । বিনোদবিহারী । নলিন, একটু থাম তুই—এই বড়ো দুঃখের সময় আর হাসাসনে ! চন্দরদী, কী জানি ভাই, একাদিক্রমে পচিশ বৎসরকাল বিয়ে না করে বিয়ে না-করাটাই যেন একেবারে মুখস্থ হয়ে গেছে। এখন হঠাৎ এই বিয়েটা কিছুতেই মনের মধ্যে গ্রহণ করতে পারছিনে । চন্দ্রকান্ত । তোর পায়ে পড়ি বিহু, তুই আমার গা ছুয়ে বল, নিদেন আমার খাতিরে তোর স্ত্রীকে ভালোবাসবি । মনে করু, তুই আমার বোনকে বিয়ে করেছিস । নলিনাক্ষ । চন্দ্রবাবুর এ নিতান্ত অন্যায় কথা ! বিমুর প্রতি উনি— বিনোদবিহার । তুই আর জালাসনে নলিন । বুঝেছ চন্দরদী, যা কিছু মনে করবার তা করেছি— তাকে আমি চোখ বুজে পরী অঙ্গরী রম্ভ তিলোত্তমা বলে কল্পনা করি কিন্তু তাতে ফল পাইনে । তবে সত্যি কথা বলি চন্দর, আসলে হয়েছে কী,